স্কুলের পথ থেকে আর ফেরা হয়নি মা-ছেলের
ছেলে আতিকের হাত ধরে স্কুলের পথে বের হয়েছিলেন গৃহবধূ ফারজানা। তবে স্কুলের সেই পথ থেকে তাদের আর ফেরা হয়নি।। গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে পথেই হারিয়ে গেলেন তারা।
চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটা এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণে শুধু মা-ছেলেই নন, প্রাণ হারিয়েছেন আরও পাঁচজন। এছাড়া একই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরো ১০ জন।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে পাথরঘাটা ব্রিকফিল্ড রোডে গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণে দেয়াল চাপায় মারা যান গৃহবধূ ফারজানা ও ছেলে আতিক। নিহত ফারজানা চট্টগ্রাম আদালতের অ্যাডভোকেট আতাউর রহমানের স্ত্রী।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আদালত থেকে ছুটে যান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। সহধর্মিণীকে হারিয়ে চমেক হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি, লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। আরেক ছেলেকে জড়িয়ে ধরে তার কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতাল এলাকা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আতিক বলেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য সকালে ফারজানার হাত ধরে আতিক বের হয়েছিল। কিন্তু স্কুলে পৌঁছানোর আগেই গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে তারা প্রাণ হারান।
এদিকে গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এ নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসক জানান, গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে নিহত সাতজনের দাফনের জন্য প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ দেয়া হবে।
এছাড়া নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ টাকা প্রদান এবং লাশ পরিবহনের ব্যয় নির্বাহের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রোববার সকাল ৯টার দিকে বড়ুয়া ভবনের সামনে চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসলাইনের রাইজার বিস্ফোরিত হয়ে ৭ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ, দুজন নারী ও একটি শিশু রয়েছে। এছাড়া অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।