‘রাজনীতি গাড়ি-বাড়ি করার পেশা নয়’
রাজনীতি গাড়ি-বাড়ি করার মতো কোনো পেশা নয় বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পাশাপাশি দেশে সুষ্ঠু ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের নিতে হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা উপলক্ষে এর আয়োজন করা হয়।
আবদুল হামিদ বলেন, রাজনীতিবিদের জন্য নীতি ও আদর্শ মেনে চলা খুবই জরুরি। দেশ, জাতি ও দল পরিচালনায় নেতৃত্বের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর নেতৃত্ব সঠিক পথে পরিচালিত হলে দেশ, জাতি এবং দলও সঠিক পথে এগিয়ে যায়। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। দলের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ে। রাজনীতি যাতে রাজনৈতিক পরিবেশে অর্থাৎ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে জনগণের কল্যাণে পরিচালিত হতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘হঠাৎ করে টাকা বা ক্ষমতার জোরে নেতা হওয়া যায়, কিন্তু জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যায় না। একজন রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলের জন্য জনগণের আস্থা ও সমর্থন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
মানুবকল্যাণ নিশ্চিত করা রাজনীতির মূল লক্ষ্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজনীতি কোনো পেশা নয় যার বিনিময়ে গাড়ি-বাড়ি করা যায়। কিন্তু আজকাল দেখা যায় ছোটখাটো নেতা হলেই টাকা, গাড়ি-বাড়ির অভাব হয় না।’
তিনি বলেন, ‘একটা শ্রেণি রাজনীতিকে ব্যবসা আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। রাজনীতিতে এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, অন্যথায় রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও আগ্রহ কমে যাবে। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠার পথ রুদ্ধ হবে। রাজনীতি তখন আর রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন। আরও বক্তব্য রাখেন হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বোন জেবা রশীদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী ও সংসদ সদস্য আলী আশরাফ। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, স্মৃতি পরিষদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন ।