০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৬:২৩

গুজবের প্রাবল্যে আমরা মর্মাহত: আনিসুল হক

  © টিডিসি ফটো

মন্ত্রিসভায় অনির্ধারিত আলোচনার পর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে তিনি প্রকৃত সত্য তদন্তের মাধ্যমে বের করে আনার আহবান জানিয়ে বলেছেন, কিশোর আলো একান্তভাবে চায় তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য উঠে আসুক। গুজবের প্রাবল্যে তিনি মর্মাহত বলেও জানান।

এক. কিশোর আলো কাজ করে শিশুদের নিরাপদ শৈশব এবং আলোকিত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে। প্রত্যেক দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আয়োজকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল। পুলিশ, র‌্যাব, দুটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীরা সেখানে ছিলেন। একটা জরুরি চিকিৎসাশিবির ছিল, যাতে দুজন এফসিপিএস চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন। আইসিইউ সুবিধাসংবলিত অ্যাম্বুলেন্স সেখানে প্রস্তুত ছিল। বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে নাইমুল আবরার কেমন করে এল, সেখানে কোনো ত্রুটি ছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে কিশোর আলো সহায়তা করছে।

দুই. একজন ছাত্র মারা যাওয়ার পরও অনুষ্ঠান চালানো হয়েছে কেন? আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কথা ঘোষণা করার আগেই অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠান শেষ হয় পৌনে পাঁচটার দিকে। হাজার হাজার দর্শক তার সাক্ষী। মৃত্যুর খবর আসে তার পরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা মৃত ঘোষণা করে ৪টা ৫১ মিনিটে। যখন এই খবর আসে, তখন দর্শনার্থীদের প্রায় সবাই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছেন। ছাত্রের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার খবর তাই সত্য নয়।

তিন. অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত চিকিৎসাশিবিরে আবরারকে আনা হলে দুজন এফসিপিএস চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দেন এবং অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাকে কোন হাসপাতালে নেওয়া হবে, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকেরা, যা তাঁদের এখতিয়ারভুক্ত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা হাসপাতালে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেটর প্রস্তুত রেখেছিল। হাসপাতালের পৌঁছেই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

চার. যে মারা গেছে, তার পরিচয় জানা যায় পরে। আবরারের পরনে ইউনিফর্ম ছিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর তার ব্যাগ ঘেঁটে পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। সেখান থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষ, পরিবার এবং কিশোর আলোকে জানানো হয়। ছাত্রের পরিচয় জানার সঙ্গে সঙ্গে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করা হয়। এসবই ঘটে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে।

পাঁচ. আবরারের পিতা-মাতা এবং অভিভাবকেরা নিজেরাই আলাপ করে পুলিশের কাছে আবেদন করেন যে, এটা একটা দুর্ঘটনা। তাঁরা ময়নাতদন্ত চান না। তদন্তে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক, কিশোর আলো তা একান্তভাবে চায়। গুজবের প্রাবল্যে আমরা মর্মাহত।