০৪ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৩৪

আয়োজকদের চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই আবরার দুর্ঘটনা: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

  © টিডিসি ফটো

আয়োজকদের চরম অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। আবরারকে কাছের কোন হাসপাতালে না নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নেওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে লিখেছেন তিনি।

সোমবার তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা এক স্ট্যাটাসে এসব মন্তব্য করেছেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি কলেজটির এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি।

তিনি তার ফেসুবক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত ‘কিআনন্দ’ অনুষ্ঠানে রেমিয়ান আবরার রাহাত জেনারেটরের বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। এই কলেজের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে তার অনাকাঙ্কিত মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি এবং রেমিয়ান আবরারের শোকাহত পরিবারের প্রতি সকল রেমিয়ানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতা ও একাত্মতা প্রকাশ করছি।

আমি জেনে খুব আশ্চর্য হয়েছি যে, আবরার আহত হয়ে মারা গেলেও অনুষ্ঠানের আয়োজকরা তাদের ‘কিআনন্দ’ অনুষ্ঠান বাতিল করেননি এমনকি কলেজ কর্তৃপক্ষকেও জানায়নি। আবরারকে কাছের কোন হাসপাতালে না নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নিয়েছিলো। ততক্ষণে আবরারের মৃত্যু হয়েছে। আয়োজকদের চরম অব্যবস্থাপনার কারণেই আবরারের দুর্ঘটনা হয়েছে।

রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ইটন স্কুলের আদলে। এর মূল লক্ষ্যই ছিলো আদর্শ মানুষ তৈরির করা। রেসিডেনসিয়াল স্কুল প্রতিষ্ঠার পর সেইভাবে এই প্রতিষ্ঠান ছাত্রদের তৈরি করেছে। আমাদের সময় ছাত্র সংখ্যা ছিলো মাত্র ৩০০ জন। বিশাল খেলার মাঠ ছিলো। আমাদের এই রেমিয়ানদের মধ্যে থেকে বর্তমানে ৪ জন সংসদ সদস্য আছেন, আমিসহ দুইজন কেবিনেট সদস্য রয়েছি। সাথে সচিব, রাষ্ট্রদূত এবং বিভিন্ন পদস্থ পদে আরো অনেক সাবেক শিক্ষার্থী রয়েছেন।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো বর্তমানে আমাদের প্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অতীতের সেই গৌরব হারিয়েছে। এখন ছাত্র সংখ্যা ৬ হাজার। ছাত্র সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অতীতের মত পরিবেশ আর নেই। আমাদের সময় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক, ক্যাম্পিং এর মত বিষয়গুলোও ছিলো আমাদের পড়াশোনার অংশ। এই কারণেই সেই সময় বাংলাদেশের দ্রুততম মানব এই স্কুল থেকে হয়েছিলো। জাতীয় দলের অধিনায়ক থেকে শুরু করে খেলাধুলাতেও এই স্কুলটার অবদান ছিলো। কিন্তু এখন আর নিয়মিত খেলাধুলা হয়না, ক্যাম্পিং হয়না, আগের মত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও কমে গেছে।

বর্তমানে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের মাঠ ভাড়া দিয়ে থাকে। একজন রেমিয়ান হিসেবে স্কুলের আয়োজন ছাড়া অন্যদের মাঠ ভাড়া দেওয়ার বিপক্ষে। ওল্ড রেমিয়ান্স ওয়েলফেয়ার এসোশিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে এই সব বিষয় নিয়ে এবং আবরারের মৃত্যুর জন্য দায়ীদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে কথা বলবো।