মসজিদ কমিটির পদেও ভোটের লড়াই!
মসজিদ কমিটিতে পদ পেতে এবার ভোটের লড়াইয়ে নামছেন নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ২২ নং ওয়ার্ডে আমিন আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা। এজন্য বন্দর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন সমবায় অফিসারকে দেয়া হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে তবে দুটি প্যানেলে বিভক্ত এ নির্বাচন সম্প্রীতির বদলে শত্রুতার জন্ম দিচ্ছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এ বিরল ঘটনায় কৌতূহল বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। তাদের মনে প্রশ্ন মসজিদ কমিটির মতো অলাভজনক পদেও কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা?
বন্দরের ২২ নং ওয়ার্ডে আমিন আবাসিক এলাকায় ৫নং রোডে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ছবিসংবলিত রঙ-বেরঙের ব্যানার, রাস্তার দুই পাশের বাসা-বাড়িগুলোর দেয়ালে লাগানো হয়েছে পোস্টার, বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট। মসজিদ কমিটিতে স্থান পেতে দুটি প্যানেলে বিভক্ত প্রার্থীরা ভোট চাইছেন এলাকাবাসীর কাছে।
তবে স্থানীয়রা এ নির্বাচনকে ভালো দৃষ্টিতে দেখছেন না। তারা বলছেন, ইতঃপূর্বে মহল্লার মুরুব্বি, নামাজি, পরহেজগার ও জ্ঞানীদের পরামর্শের ভিত্তিতে গঠন হয়ে আসছে মসজিদ কমিটিগুলো। এবারই ব্যতিক্রম।
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মসজিদটিতে হতে যাচ্ছে ভোট গ্রহণ। মসজিদ কমিটির নির্বাচন নিয়ে এলাকাবাসীর দাবি, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ায় ইতোমধ্যেই অর্থের অপচয়, দলাদলির সৃষ্টি ও কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি পরস্পর শত্রুতার স্থায়ী বীজ বপন হচ্ছে।
সূত্র গোপন রাখার শর্তে ওই মসজিদের এক মুসল্লি বলেন, আল্লাহর ঘরের খেদমত ও মুসল্লিদের খেদমত তো নয়ই বরং সামাজিক পদমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য এভাবে মসজিদ কমিটির নির্বাচন হচ্ছে। এটা নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছু নয়।
ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের কারণ জানতে চাইলে মসজিদের সভাপতি পদপ্রার্থী মোজাম্মেল হক বলেন, ২০১০ সাল থেকে মসজিদ কমিটির বিভিন্ন পদ দখল করে আছে শাহজাহানরা। যোগ্যতা ও সৎ ইচ্ছা না থাকলেও বারবার নিজেদের উক্ত পদে বহাল রেখে তারা কমিটি গঠন করতেন।
তিনি বলেন, আমার বিষয়টির প্রতিবাদ করে নানাভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা না মানায় আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসি সাহেবকে জানাই। পরে বাড়ির মালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রশাসন নিয়ে বসা হলেও সিদ্ধান্ত তারা মানেনি। আমরাও ছাড়ব না। তাই শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আল-আমিন জামে মসজিদ ও পঞ্চায়েত কমিটিতে দুটি প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মসজিদটিতে ভোটার রয়েছে ২১৯ জন। প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন বন্দর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন সমবায় অফিসার।
একটি প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন মো: আব্দুল কাইউম, সহ-সভাপতি পদে মো: জিয়াউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পদে মো: শাহজাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী মোহাম্মদ আলী ও কোষাধ্যক্ষ পদে লড়ছেন হাজী আমজাদ হোসেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন হাজী মোজাম্মেল হক, সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক পদে লুৎফর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুব-আর-রশিদ ও কোষাধ্যক্ষ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার।