১৯ জুলাই ২০১৯, ২১:৩৮

তিনি কেন এটা করলেন, খতিয়ে দেখা হবে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান গুম হয়েছে বলে অভিযোগ প্রিয়া সাহার। তিনি বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার এমন বক্তব্য নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

এবার এই ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগের সমালোচনা করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। শুক্রবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভেরিফাইড ফেসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাস দেন।

তিনি লেখেন, আমি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় একাধিকবার ভরা হাউসে পৃথিবীর সব দেশের এবং বাংলাদেশ ও বাইরের দেশের এনজিওদের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। যেখানে শ্রদ্ধেয় রানা দাশ গুপ্তর মতো মানুষেরাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দেয়া প্রিয়া সাহার অভিযোগের মতো কোন অভিযোগ বা প্রশ্ন কাউকে করতে দেখিনি।

তিনি আরও লেখেন, ‘তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি কেন এটা করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে। তার অভিযোগুলোও সরকার শুনবে এবং খতিয়ে দেখবে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পও জানেন যে তার কাছেও মিথ্যা অভিযোগ করা হয়। মার্কিন প্রশাসন তাদের এখানকার দূতাবাসের মাধ্যমেই প্রতিনিয়ত তথ্য পেয়ে থাকে এবং আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগে থাকি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘প্রিয়া সাহার সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সমালোচনা করছেন। এটাও ঠিক নয়। যেমনটি নয় প্রিয়া সাহার করা অভিযোগ। সমাজের সকল স্তরে যার বিচরণ এবং সরকারের বিভিন্ন মহলের সাথে যার যোগাযোগ তার একইরকম আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্মীয় সম্প্রতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। অনেকেই ব্যক্তি স্বার্থে বা না বুঝে এটার ক্ষতি করে ফেলেন। সবার উচিত এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা ’

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার বিভিন্ন ধর্মের ২৭ জনকে মানুষকে ডেকেছিলেন তাদের দুর্ভোগের কথা শোনার জন্য। সেখানে মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চায়না, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, আফগানিস্তান, নর্থ কোড়িয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান জার্মানি, বাংলাদেশ সহ আরো কয়েকটি দেশের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

তাদের প্রত্যেকেই ট্রাম্পকে তাদের নিজ দেশের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন। সেখানেই বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রণ পান বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা। তার বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরে। তিনি ট্রাম্পকে বলেন, তার জমি জমা কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশি মুসলিমরা, তার ঘরবাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।

ওভাল অফিসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি ট্রাম্পকে বলেন, 'আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টানকে গুম করা হয়েছে। এখনো সেখানে ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে নিয়েছে, আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু সেসবের কোনো বিচার নেই।'

ডোনাল্ড ট্রাম্প জিজ্ঞেস করেন কারা এসব করছে? বাংলাদেশি ওই নারী বলেন, 'সবসময় উগ্রবাদী মুসলিমরা এই কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই কাজ করে।'