অবশেষে শিশুর ‘মাথা কাটা’ রহস্য উদঘাটন
নেত্রকোনায় ব্যাগ থেকে শিশুর মাথা উদ্ধারের ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড। এরসঙ্গে ছেলে ধরা কিংবা পদ্মা সেতুতে বলির গুজবের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী।
নেত্রকোনা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন নেত্রকোনায় ব্যাগ থেকে শিশুর মাথা উদ্ধারের ঘটনাটি একটি হত্যাকাণ্ড। এটার সঙ্গে ছেলেধরা বা পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে গুজবের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অপরিচিত হলেই সন্দেহ করে কাউকেই মারধর করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন এ ধরনের ভুল সিদ্ধান্তে নিজেও অপরাধী হয়ে যেতে পারেন। এলাকা, পাড়া বা মহল্লায় অপরিচিত কাউকে সন্দেহ হলে তার সাথে কথা বলুন, তার পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হোন। তারপরেও কোনো সমস্যা হলে পুলিশক খবর দিন। পুলিশের কাছে সোপার্দ করুন।
দেহ নেই, ব্যাগ থেকে বের হলো শিশুর মাথা (ভিডিও)
ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়ানো গুজবের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটল। শিশুটির মাথা পাওয়া গেলেও তার দেহটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনাটা নেত্রকোনা শহরের নিউ টাউন এলাকার। এখানেই ব্যাগের ভেতর শিশুর কাটা মাথা পাওয়ায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উত্তেজিত জনতা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তার নাম সজীব। বয়স আট। সে নেত্রকোণারই সদর উপজেলার আমতলা গ্রামের রিকশা শ্রমিক রইছ উদ্দিনের ছেলে। রইছ উদ্দিন বর্তমানে শহরের কাটলি এলাকায় হিরণ মিয়ার বাসায় ভাড়াটে হিসেবে থাকছেন।
অন্যদিকে গণপিটুনিতে নিহত যুবকের নাম রবিন। ২২ বছর বয়সী এই যুবক নেত্রকোণা পৌর এলাকার কাটলী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও পেশায় রিকশা চালান। কী উদ্দেশ্য শিশুটিকে খুন করেছেন, সেটিও তদন্তে বের হবে বলে বলছেন পুলিশ কর্মকর্তা তাজুল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বেলা একটার দিকে শহরের কাটলি এলাকা থেকে ওই যুবক শিশুর ছিন্ন মস্তক নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে পিছু ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্ত পুকুর পাড়ে ধরা পড়েন তিনি। সেখানেই চলে গণপিটুনি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর ছিন্ন মস্তক ও যুবকের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ বিষয়ে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনা কি কারণে ঘটেছে তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া শিশুটির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।