০৮ জুলাই ২০১৯, ২০:৪৮

তবুও আন্দোলনে ৩৫ প্রত্যাশীরা, নতুন কর্মসূচি

  © সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার যৌক্তিকতা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘১৬ বছরে এএসসি পাস, চার বছরে অনার্স এবং এক বছরে মাস্টার্স। তারপরও এক-দুই বছর দেরিও হয়, তাহলে ২৫ থেকে ২৬ বছরে পড়া শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ইমতিয়াজ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আজকের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে আমরা হতাশ।

তিনি বলেন, ১৯ বছরে বিয়ে করে একজন দিব্যি সংসার এবং পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারলে ৩৫ বছরে কেন পারবেনা। ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেছেন এখনো একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে আড়াই বছরের সেশন জটে পরতে হয়। তাহলে কিভাবে একজন শিক্ষার্থী ২৫ বছর বয়সে পড়ালেখা শেষ করে?

ইমতিয়াজ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর আমাদের আন্দেলনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প আর কিছু নেই। আমরা বড় আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামীকাল কিংবা পরশু আমরা সংবাদ সম্মেলন করবো। সংবাদ সম্মেলনে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করবো।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কবিতা তালুকদার নামে একজন বলছেন, দরকার একটা ভাল জব। পরাশুনা করতেইতো বয়স ৩০হয়ে যায়,,সুযোগটা পাচ্ছি কই? তাই বলে চাকরির বয়সসীমা ৩৫হওয়াটা যুক্তি সংগত।

সায়ন সন্ধ্যা নামে একজন বলছেন, চাকরির জন্য অনেকের বিয়ে হচ্ছে না, সন্তান কি গাছ থেকে পরবে? যারা পরীক্ষা দিবে তারা যদি সংসার সামলিয়ে পরীক্ষা দিতে পারে, তাহলে বয়স বাড়িয়ে পরীক্ষা নিতে এত সমস্যা কোথায়? নাকি পরীক্ষার খাতা দেখার মত শিক্ষকের অভাব পরে গেছে সরকারের?

রেজাউল করিম রেজা নামে একজন বলছেন, আমি মাস্টার্স রানিং স্টুডেন্ট, আমার অনার্স সেশন ২০১১-২০১২। অনার্স পাস করার কথা ২০১৫ সালে বাট অনার্স এর রেজাল্ট পাইছি ২০১৮ এর শেষের দিকে। মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছি ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল ধরে। এখনো রেজাল্ট পাইনি মাস্টার্স এর। এভারেজ তিনটা বছর লাইফ থেকে শেষ করে দিলো ইউনিভার্সিটি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা মানছি ২৫ বছরে অনার্স - মাস্টার্স শেষ হবে। আমার ও হতো কিন্তু ইউনিভার্সিটি যে ৩ টি বছর নিয়ে নিলো সেশন জটে তা কে ফিরিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখলাম? প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রাখলাম? দেশের যারা আমলা তাদের কাছে প্রশ্ন রাখলাম? এই ৩ টি বছর আমাকে কিভাবে ফিরিয়ে দিবে? এখানে বিসিএস এর কথা আসতেছে কেন?? সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা উল্লেখ যোগ্য বিষয়।

মো. হায়দার আলী বলছেন অযৌক্তিক কথা, এই রকম ছোট ছোট আন্দোলন ইংরেজদেরকে ভারতবর্ষ থেকে বিতারিত করে ছিল,আমাদের দাবি যৌক্তিক মেনে নিন।

শরিফুল ইসলাম বলছেন, ধৈর্য হারাবেন না এটা একটা মানসিক পরীক্ষা। মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছেন। আমাদের রাজপথের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই পথে গন্তব্যে পৌঁছতে সাহায্য করবে। 

কায়সার আহমেদ সনি বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাদের জীবন থেকে সেশনজটে এই রাষ্ট্র ৩/৪ বছর খেয়ে নিয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে তো কিছু বলুন!! আর আপনা মতে যদি ৩০ বছরে আমাদের চাকরির টেবিল চালানোর এনার্জি না থাকে, তাহলে ৭১ বছর বয়সে দেশ চালানোর এত্তো এনার্জি আপনিই বা কোত্থেকে পান ? ২৩ বছরে যাদের মাস্টার্স শেষ হয়ে যায় তাদেরকে ৩৫ দিতে আপনাদের আপত্তি থাকলে, সেশনজটে ক্ষতিগ্রস্তদের বিশেষ পদ্ধতি আবেদনের সুযোগ দিন। না হয় সেশনজটের দায় স্বীকার করে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ক্ষমা চান। বাঙ্গালীরা ক্ষমাও করতে জানে।(বড় কষ্টে মন থেকে এমন মন্তব্য আসে)।

রাইমা রাহি বলছেন, রাজনীতিবিদরা কি এভাবেই রাজনীতি শিখেছে?মানে সে ও তো একজন রাজনীতিবিদ আমাদের মত চাকরি না পেয়ে এভাবে রাজনীতিতে গিয়েছেন?

মো. ফাহিম বলছেন, তাহলে ভোট প্রার্থী দের বয়স ও নির্দিষ্ট করে দেন। কারন ভোট পেয়ে উনারা সহজেই সরকারের মন্ত্রি হয়ে যান। আফসোস অন্যান্য দেশ এর সাথে নিজেদের তুলনা করি সব বিষয় অথচ এই ক্ষেত্রে কেন তুলনা করা হয় না।