কেন মার্কিন দূতাবাসে দাওয়াত পেলেন কোটা আন্দোলনকারীরা?

  © সংগৃহীত

গতকাল (শনিবার) বাংলাদেশে অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাস পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। মাহফিলে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী সমাজ, সুশীল সমাজ, সরকারের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ ছাত্র সংগঠনে নেতৃবৃন্দকে দাওয়াত করে।

অনুষ্ঠানে আমেরিকান দূতাবাসের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’কে দাওয়াত করা হয়েছিল। আমাদের পক্ষ থেকে ডাকসুর ভিপি সহ তিন জন অনুষ্ঠানে যোগদান করে।

কথা হচ্ছে, আমাদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দের ছবি দিয়ে গুজববাহিনী গতকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে, যেটা আমরা মনে করি আমাদের জন্য ফ্রি এডভার্টাইজম্যান্ট (বাংলায় যাকে বলে বিনা পয়সায় প্রচারণা)। তারা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে, কেন তাদের দাওয়াত দিল না, কেন কোটা আন্দোলনের নেতাদের দাওয়াত দিল ইত্যাদি। আগে বলত কোটা আন্দোলন বিএনপি-জামাতের সৃষ্টি আর এখন বলে কোটা আন্দোলন নাকি আমেরিকার সৃষ্টি। যাইহোক সামনে আরো অনেককিছু শুনতে হবে আমাদের, সামনে আবার কি বলে সেই অপেক্ষায় থাকি আমরা..!

এখন আসি আসল কথায়, তারা আসলে ছাত্র সংগঠনগুলোকে দাওয়াত করেছে। এখন আপনাদের ভাবতে হবে চিন্তা করতে হবে, আপনারা প্রকৃতপক্ষে ছাত্র সংগঠন কি না। ছাত্র সংগঠনের কাজ ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলা, মাঠে নেমে আন্দোলন করে ছাত্রদের যেকোনো যৌক্তিক দাবির বাস্তবায়ন করা, প্রয়োজনে জেল জরিমানা এমনকি রিমান্ড পর্যন্ত সহ্য করা। যার কোনটাই আপনারা করেননি, তাহলে আপনারা কি করে দাবি করেন যে, আপনারা ছাত্র সংগঠন?

ছাত্র সংগঠনের কাজ কি মারামারি, কাটাকাটি, টেন্ডারবাজি, হল দখল, যৌন আক্রমণ, লুটপাট থেকে শুরু করে নিজ দলের মধ্যে হানাহানিতে লিপ্ত হওয়া?

আপনারা ছাত্র সংগঠন হলে, ছাত্রদের যেকোনো যৌক্তিক বিষয়ে কথা বলতেন প্রয়োজনে রাজপথে নেমে আন্দোলন করতেন, কই কখনোই তো দেখলাম না ছাত্রদের যৌক্তিক কোন দাবি নিয়ে আপনারা কথা বলেছেন বা মাঠে নেমেছেন।

আমরা ছাত্রদের যৌক্তিক অধিকার আদায় করতে গিয়ে হামলা-মামলা, জেল-জরিমানা, রিমান্ড সবই সহ্য করেছি। ছাত্রদের দাবি আদায়ে কখনোই আমরা পিছপা হইনি। এখন ভাবুন দাওয়াত কারা পাওয়ার যোগ্য?

আর এই বিষয়টা নিয়ে যারা আলোচনা সমালোচনা করছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি, আগে ভালো কাজ করে ছাত্র সংগঠনে পরিনত হোন, ছাত্র সমাজের মাঝে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করুন, তারপর বিভিন্ন দূতাবাসে দাওয়াতের আশা করবেন। আর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কেন দাওয়াত দিল না বলে মন খারাপ টাইপের পোস্ট দিয়ে সংগঠনটাকে ভেলকা বানায়েন না। 

আমরা প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী। সবার ভালো চাই।

লেখক: যুগ্ম-আহবায়ক,
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

পড়ুন: টাকায় র‌্যাঙ্কিং: বক্তব্য না বুঝে নিউজ করেছে গণমাধ্যম

পড়ুন: সেই ছাত্রলীগ নেত্রীকে অপহরণ চেষ্টা, থানায় জিডি


সর্বশেষ সংবাদ