খাল পুনঃখননে জোর দিচ্ছে বিএনপি, কৃষকদের নিয়ে মির্জা ফখরুলের স্ট্যাটাস
কৃষক ক্ষেতে কিছু ধান না কেটে পাখির জন্য রেখে দিয়েছেন। এমন একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার (২৩ নভেম্বর) সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জোর দিচ্ছে খাল পুনঃখননে, যাতে সেচ পানির প্রাপ্যতা বাড়ে। দুষ্প্রাপ্য বা জলসঙ্কটপূর্ণ এলাকাগুলোতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার (কম পানির প্রয়োজন এমন ফসল, লবণসহনশীল বীজ) উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পোস্টটি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-
‘এখন ধান কাটার মৌসুম। আমার চাষী-ভাই ধান কাটছেন। ধান রেখে দিচ্ছেন পাখির জন্য। আল্লাহ তাঁর রিজিক দ্বিগুণ করে দিক।
অনেকে জানেন না, আমার দুই চাচা ফার্মিং করতেন। একজন উইং কমান্ডার এস আর মির্জা ( এপ্রিল ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার, যেটি মুজিবনগর সরকার নামে খ্যাত, এই সরকার কর্তৃক ডাইরেক্টোরেট অব ইয়ুথ ক্যাম্পের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন)। তিনি শুধু আমার চাচা ছিলেন না , ছিলেন আমার গার্ডিয়ান। আরেকজন তাঁর ভাই , বাবলু মির্জা , আমার চাচা এবং বন্ধু। এনারা নিজেরা মাঠে থাকতেন।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প (BMDA) বিএনপি সরকারের সময়েই সবচেয়ে সম্প্রসারিত ও কার্যকর করা হয়। বিশেষ করে খরা-প্রবণ রাজশাহী, নওগাঁ ও চাপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে এটি কৃষিতে বিপ্লব ঘটায়।
গভীর নলকূপ স্থাপন এবং সেচব্যবস্থা সম্প্রসারণ, অনাবাদি জমিকে আবাদযোগ্য করা, ধান, গম, ভুট্টা ও শাকসবজির উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি, খরা অঞ্চলে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক কৃষি-অর্থনীতিতে স্থায়িত্ব আনা এই প্রকল্পের অধীনে করা হয়।
বরেন্দ্র এলাকায় এই প্রকল্পের কারণে সেচনির্ভর কৃষির প্রসার হয় এবং হাজার হাজার কৃষক উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হন—এটি বিএনপির সময়ের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী সফল উদ্যোগ হিসেবে স্বীকৃত।
তারেক রহমান বলেছেন, ‘কৃষকদের হাতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়বে।’
বিএনপি তাদের কৃষি দর্শনে “সত্যিক খাদ্য নিরাপত্তা” গড়তে চায় এমন একটি কাঠামোর দিকে — যেখানে সরকার, কৃষক, উদ্যোক্তা ও জনগণ এক-সাথে অংশীদার হবে। কৃষকরা শুধুমাত্র পণ্যের উৎপাদক নন, বরং অর্থনীতির মূল অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে সার, বীজ, ঋণ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের ওপর “ফার্মারস কার্ড”-এর মাধ্যমে সরাসরি কৃষকের অ্যাক্সেস। চার-বছর বা বেশিতে “কৃষি বিমা” চালু করার পরিকল্পনা আছে , শস্যবিমা, পশু-বিমা, মৎস্য বিমা ইত্যাদি। ভর্তুকিপ্রাপ্ত নীতিগুলো কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকে সমর্থন দেবে, যাতে কৃষক শুধু শস্য বিক্রি না করে প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকেও মুনাফা পায়।
বিএনপি জোর দিচ্ছে খাল পুনঃখননে, যাতে সেচ পানির প্রাপ্যতা বাড়ে। দুষ্প্রাপ্য বা জলসঙ্কটপূর্ণ এলাকাগুলোতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার (কম পানির প্রয়োজন এমন ফসল, লবণসহনশীল বীজ) উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে।
বিএনপি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে চায়, বিশেষ করে নতুন জাতের বীজ (যেমন লবণ-সহনশীল, কম পানির প্রয়োজন ফসল) উদ্ভাবনে। GMO (জেনেটিক্যালি মডিফাইড) ফসল নিয়ে বিএনপি একটি “নিবিড় পরীক্ষা-নিরীক্ষা” এবং পরিবেশ-সুরক্ষা মূলক নীতি গ্রহণের কথা বলেছে।
বিএনপি কৃষি উন্নয়নকে শুধু উৎপাদন-ভরকেন্দ্রিক নীতিতে সীমাবদ্ধ রাখে না — তারা বলেছে, “সুষম, নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি” নিশ্চিত করার জন্য প্রণোদনা দেবে। খাদ্য অপচয় কমানোর জন্য আধুনিক গুদাম ও কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি আছে, যা কৃষকের আয় বাড়াবে।
প্রক্রিয়াজাত খাত এবং রপ্তানিমুখী খাদ্য শিল্পকে উৎসাহ দিয়ে কৃষি থেকে আরও মূল্য সংযোজন করতে চায়। ড্রোন প্রযুক্তি, মেশিনরাইজেশন, স্টার্টআপ ফান্ড দিয়ে তরুণদের কৃষি উদ্যোক্তায় পরিণত করতে চায়।
‘চক্রাকার অর্থনীতি’ গড়ার কথা বলেছে — যেখানে কৃষি বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হবে, বায়োগ্যাস উৎপাদন হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি টেকসই হবে। প্রতিবেদনে তারা ‘আলটারনেট ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রায়িং’ পদ্ধতি চাষে সম্প্রসারণ করার কথা বলেছে, যা পানি সাশ্রয় করবে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাবে। বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে এই কাজগুলো করবে ইনশাআল্লাহ।