আওয়ামী লীগ নেতাদের একহাত নিলেন ছাত্রলীগ নেত্রীরা
সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল এবং মধুর ক্যান্টিনে সংগঠনের নারী নেত্রীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিতরা। বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এসময় মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের উপর হামলাকে ছোট ঘটনা বলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের কড়া সমালোচনা করেন হামলার শিকার নেত্রীরা।
তারা ঘোষিত কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের স্থান দেওয়া এবং হামলার জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন।মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ বঞ্চিত শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এতে কমিটি বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার বহন করেন তারা।
এসময় রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বিএম লিপি আক্তার বলেন, ‘অনেকেই ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। আমাদের উদ্দেশ্য যারা কমিটিতে এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে দক্ষ ও যোগ্যদেরকে নিয়ে কমিটি করা।’
এসময় নতুন কোন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৪৮ ঘন্টার সময় দেওয়া ছিল। আগামীকাল এটি শেষ হবে। তারপরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
আরো পড়ুন:বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ নেত্রীর: রাব্বানী
তিনি বলেন, ‘এক বছর পর কমিটি হয়েছে, এখানে সবার মন জয় করে কমিটি করা সম্ভব নয়। আর যারা কমিটিতে স্থান পেয়েছে তাদের সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যারা যোগ্যতা অনুযায়ী পোস্ট পেয়েছে তাদেরকে আমরাও শুভেচ্ছা জানিয়েছি। কিন্তু অনেকেই রয়েছে যাদের কোন যোগ্যতাই নেই, তাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের সাক্ষ্য, প্রমাণ রয়েছে। তারা কমিটিতে থাকলে ছাত্রলীগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মত প্রকাশের যুক্তিসঙ্গত পন্থা বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু তা করতে দেওয়া হয়নি। কমিটি গঠন করেছে, কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। কমিটির সদস্যরাও আমাদের সঙ্গে আলোচনায় আসেনি। তাহলে এটা প্রহসন করা হলো আমাদের সঙ্গে।’
লিপি আক্তার বলেন, ‘যারা ছাত্রলীগকে কলূষিত করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব। আমার দিকে গ্লাস ছুড়ে মারলে মাথা সরিয়ে নিই, সেটি গিয়ে লাগে রোকেয়া হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবনী দিশার চোখের পাশে। দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কেউ ঘটনাস্থলে না থেকে যদি বলে, চেয়ারের কোনা লেগে আঘাত পেয়েছে।’
এসময় আওয়ামী লীগ নেতারা এটিকে সামান্য ঘটনা বলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের শামসুন্নাহার হল শাখার সভাপতি ও নতুন কমিটিতে উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ পাওয়া নিপু তন্বী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে সম্মান প্রদর্শন করে জানতে চাই, মধুর ক্যান্টিনের ঘটনাটি কোন পর্যায়ে গেলে তাদের কাছে মনে হত এটি বিশাল আকারের ঘটনা। আমাদেরকে আর কতটুকু লাঞ্ছিত করলে তাদের কাছে মনে হত ছাত্রলীগের নারীদের উপর নির্যাতন হয়েছে। আমরা মারা যাওয়ার পরে কি ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পেত?’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নিবেদিত প্রাণ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনের মতো জায়গায় সংগঠনেরই কিছু ছোট-বড় ভাই দ্বারা নির্যাতিত হই, এরপর আর কোন মা-বাবা-ভাই-বোন ছাত্রলীগ করার জন্য তাদের ঘরের সন্তানকে পাঠাবে না। নারী নেত্রীরা বার বার নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর কত নারী নেত্রীর উপর আঘাত আসলে টনক নড়বে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের। আমরা কবে নিবৃতি পাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের নেত্রী এশার উপর হামলা হয়েছে। এরপর তাকে অনেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেখে রাখবেন, তাকে মূল্যায়ন করা হবে। কোথায় সেই মূল্যায়ন? প্রশ্ন থেকে যায়।’
আরো পড়ুন: ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কমিটি বাতিল না হলে অনশন করবেন পদ বঞ্চিতরা