ভৈরবে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নৌপথ অবরোধ করে জেলা বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তবে কর্মসূচিতে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের সাড়া না পাওয়ায় মাত্র ১৫ মিনিটেই শেষ হয় কর্মসূচি।
এদিন সকালে মেঘনা নদীর ভৈরব বাজার লঞ্চঘাট এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় ভৈরবকে জেলা ঘোষণা করতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন জেলা বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতারা। অন্যথায় কাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একযোগে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
নৌপথ অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল, ছাত্রনেতা মো. শাহরিয়ার, মুহাম্মদ জুনায়েদসহ শতাধিক মানুষ। এ সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিতে লঞ্চঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া এলাকায় উপস্থিত ছিলেন ইউএনও শবনম শারমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএইচএম আজিমুল হক, ভৈরব থানার ওসি ফুয়াদ রুহানী ও নৌ থানার ওসি মো. রাশেদুজ্জামান।
আন্দোলনে যোগ দেননি অন্য রাজনৈতিক দলের কোনো নেতা। অথচ ২৬ অক্টোবর দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ ও ২৭ অক্টোবর রেলপথ অবরোধে ভৈরবের বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের অনেকে যোগ দিয়েছিলেন।
নৌপথ অবরোধ উপলক্ষে গতকাল লঞ্চঘাটে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিনের জেলা বাস্তবায়ন আন্দোলনকে বানচাল করতে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। গত সোমবার সাংবাদিকরা এক পক্ষের খবর প্রকাশ করেছেন যে, বিক্ষোভকারীরা ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করেছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আন্দোলনকারীদের সামনে রেখে ট্রেন এগিয়ে যেতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। এ সময় কিছু দুষ্কৃতকারী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, যদি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় জেলা আন্দোলনের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষ মাঠে নেমে যাবে। ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনার দায় রেলওয়ে ওসি ও রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারকে নিতে হবে।
এদিকে গত সোমবার ভৈরব বাজার স্টেশনে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা করেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ। গত সোমবার রাতে রেলওয়ে থানায় তিনি অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন। মামলার পর মধ্যরাতে রেলওয়ে ডিবি পুলিশ ও রেলওয়ে থানা পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো– পৌর শহরের পঞ্চবটী বউবাজার এলাকার লোকন মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া ওরফে ফহিম (১৭), একই এলাকার হুশিদ মিয়ার ছেলে সাজন মিয়া (১৭) ও জজ মিয়ার ছেলে আরমান মিয়া (১৭)।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি সাঈদ আহমেদ বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
মামলার বাদী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় বিভিন্নভাবে ট্রেনের এক লাখ ৫০ হাজার টাকার মালপত্রের ক্ষতি হয়েছে।