মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত ‘সাহসী কন্যা’: কাজী রিয়াজুল হক
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নারী নির্যাতনের বিরূদ্ধে ‘প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা তাকে ‘সাহসী কন্যা’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছি। আমরা নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেখতে চাই। শুধু নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই না, এ পর্যন্ত দেশে যত মেয়ে হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে; এসব ঘটনায় যারা তাদের সবার দ্রুত বিচার চাই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে কমিশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কমিশন থেকে গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে সাতটি সুপারিশের কথা উল্লেখ রয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে কমিশনের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী ও বাঞ্ছিতা চাকমা, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আল মাহমুদ ফয়জুল কবির ও সদস্য সচিব এম রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গত ১১ এপ্রিল কমিশনের পরিচালক আল মাহমুদ ফয়জুল কবিরকে আহ্বায়ক এবং উপ-পরিচালক এম রবিউল ইসলামকে সদস্য সচিব করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তার একটা পরিকল্পনা করেছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। তাহলে তারা কীভাবে কেন্দ্রে ঢুকলো। শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নয়, পুরুষরাও সেখানে ছিল এবং হত্যাকা- ঘটিয়ে তারা চলে যায়। এই অসৎ শিক্ষকের জন্য যারা আন্দোলন করলো তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কিন্তু গ্রামগঞ্জে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। বিচার প্রক্রিয়া সহজতর করতে যে কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে করা দরকার সেগুলো করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, সময়মত সাক্ষী না দেয়ার কারণে এমন ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না।
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেসব তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে মনে করতে চাই দ্রুত সময়ের মধ্যেই পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। আইনে বলা আছে, হাতেনাতে ধরা পড়লে ১৫ দিনের মধ্যেই পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। আমরা দেখেছি শিশু রাজন, রাকিব হত্যার ক্ষেত্রে পুলিশ দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল এবং আদালত দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছিলেন। আমরা নুসরাতের ক্ষেত্রে সেটা দেখতে চাই।