০৭ মার্চ ২০২৫, ১৬:৩০

রমজানে জমে উঠেছে বউ বাজার, নারী ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

  © সংগৃহীত

দিনাজপুরে রমজানের প্রথম দিন থেকেই জমে উঠেছে বউ বাজার। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাজারে নারী ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে, বিশেষ করে থান কাপড় ও থ্রি-পিসের দোকানে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দোকান কর্মচারীরা বাড়তি আয় করার উদ্দেশ্যে এবং নারীদের চাহিদা পূরণের জন্য বিশেষভাবে এই বাজারটি আয়োজন করে থাকে। প্রতি শুক্রবার এই বাজারটি নারীদের জন্য বিশেষভাবে খোলা থাকে এবং এটি ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঈদ আসন্ন হওয়ায় বাজারে ভিড় আরো বেড়েছে।

সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বাসুনিয়াপট্টি, মাহদহপট্রি, চুরিপট্রি ও গরুহাটি রাস্তাগুলোর দুই ধারে বউ বাজার বসে। এসব দোকানের মালিক সাধারণত দোকানের কর্মচারীই হন, এবং ছুটির দিনে তারা এই বাজারের আয়োজন করে। এখানে ক্রেতারা অনেক কম দামে তাদের পছন্দের কাপড় ও অন্যান্য পণ্য সংগ্রহ করতে পারেন, যার ফলে দোকান কর্মচারীরাও বাড়তি আয় করতে পারছেন।

বউ বাজারের কাপড়গুলো উন্নত মানের দোকানগুলোর তুলনায় অনেক কম দামে পাওয়া যায়, কারণ এখানে দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি খরচ নেই। এর ফলে বিক্রেতারা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারেন।

শহরের ছোট গুড়গোলার বাসিন্দা সম্পা আক্তার জানান যে, বউ বাজারে উন্নত মানের কাপড় খুবই কম দামে পাওয়া যায়, যা শুধুমাত্র কম আয়ের ক্রেতাদের জন্য নয়, ধনীদের কাছেও আকর্ষণীয়। এই বাজারে পুরুষ ক্রেতা নেই, শুধু নারী ক্রেতারাই আসেন, যা মহিলাদের জন্য বিশেষ সুবিধা সৃষ্টি করেছে।

সৌমি আক্তার, একজন বিউটিশিয়ান। তিনি বলেন, তিনি নিয়মিত রমজান মাসে বউ বাজারে এসে কম দামে ভালো কাপড় কিনে থাকেন।

বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাজিম উদ্দিন রুবেল জানান, ১৭ বছর ধরে এই বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে এবং ক্রেতারা এবং কর্মচারীরা দুজনেই এর সুবিধা পাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে বাজারে দোকানের সংখ্যা ২২০ থেকে বেড়ে প্রায় ৩০০ হয়ে যায়।

বাজারের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার বলেন, বউ বাজারের নিরাপত্তার জন্য ছয়জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে দুজন মহিলা কর্মী। এছাড়া, প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ থাকেন যাতে মহিলারা নিরাপদে কেনাকাটা করতে পারেন। এই বাজারে শুধু দিনাজপুরের নয়, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী জেলার ক্রেতারাও আসেন।

দোকানদার ইমতিয়াজ মাসুদ করিম জানান, তিনি বাজারের শুরু থেকে বউ বাজারে দোকানদারি করছেন এবং এখানে রমজান মাসে বিক্রি অনেক বেশি হয়। এখানে কাপড় ছাড়াও জুতা, স্যান্ডেল এবং অন্যান্য পণ্যও পাওয়া যায়।

বউ বাজারে সার্বক্ষণিকভাবে হ্যান্ড মাইক দিয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে প্রচারণা করেন সালমা খাতুন। তিনি গ্রাহকদের মানিব্যাগ, মোবাইল ও পকেট খেয়াল রাখার জন্য মাইকিং করেন এবং রাস্তার মাঝে যেকোনো জটলা বা যানবাহন আটকে গেলে নিরাপদে চলাচলের ব্যবস্থা করেন।