ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় ভরসা বারডেম, পরিচিতি বিশ্বজুড়ে

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল
বারডেম জেনারেল হাসপাতাল  © সংগৃহীত

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় বিশ্বমানের চিকিৎসা দিয়ে পরিচিত রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতাল। চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়াবেটিস সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাও করা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিতে। এর ফলাফল পরবর্তীতে রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়। ফলে রোগীর চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হচ্ছে। শনিবার (১ মার্চ) বারডেম হাসপাতাল গিয়ে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।

হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহসেনা বেগম কাকলী বলেন, রমজানের কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ চাপ সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’টি শিফট চালু করেছে—একটি সকাল এবং অন্যটি বিকেলে। প্রতিটি বিভাগে পর্যাপ্ত স্টাফ ও ডাক্তার রয়েছেন, যারা আন্তরিকভাবে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। হাসপাতালের পরিবেশ দালালমুক্ত এবং রোগীদের সেবা নিশ্চিতে রমজানের শিডিউলে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।

হাসপাতাল ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও রোগীর চাপ অত্যন্ত বেশি, যা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। চারটি ওয়ার্ড রয়েছে, যার মধ্যে দুটি পুরুষ এবং দুটি নারীদের জন্য নির্ধারিত। এসব ওয়ার্ডে রোগীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি দেওয়া হয়। তবে এখানে একটি সমস্যা রয়েছে। রোগীর যে তারিখ দেওয়া হয়, তারা সঠিক সময়ে আসেন না। ফলে চাপ বেশি হয়ে যায়।

তিনি বলেন, রোগীর সেবার মান নিশ্চিত করতে আমাদের হাসপাতালে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট বিদ্যমান। জরুরি বিভাগের রোগী ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তবে কখনো কখনো শয্যা খালি না থাকলে ভর্তি করা সম্ভব হয় না। আমাদের হাসপাতাল ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও রোগীর চাপ অত্যন্ত বেশি, যা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালে চারটি ওয়ার্ড রয়েছে, যার মধ্যে দুটি পুরুষ এবং দুটি নারীদের জন্য নির্ধারিত। এসব ওয়ার্ডে রোগীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি দেওয়া হয়। তবে এখানে একটি সমস্যা রয়েছে। রোগীর যে তারিখ দেওয়া হয়, তারা সঠিক সময়ে আসেন না। ফলে চাপ বেশি হয়ে যায়। এতে চিকিৎসা দিতে কিছুটা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে।

হাসপাতালের কয়েকজন রোগী জানান, বারডেম হাসপাতালের গবেষণামূলক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে আসা সাফায়েতুল্লাহ (৫৫) নামের এক রোগী চিকিৎসার জন্য বারডেম জেনারেল হাসপাতালে এসেছেন। হাসপাতালের চত্বরে একই রোগে ভোগা আরেকজন রোগীর সঙ্গে আলাপচারিতায় মগ্ন ছিলেন তিনি।

কথোপকথনের মাঝে এগিয়ে গেলে তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য আমি নিয়মিত বারডেমে আসি। গত আট বছর ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছি। ডাক্তাররা প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দেন, আমি সেগুলো নিয়মিত সেবন করি। তবে এই রোগ কখনো পুরোপুরি ভালো হয় না, জীবনভর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।’

সাফয়েতুল্লাহ’র ভাষ্য, বারডেমের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত, যার ফলে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এখানে ভিড় করেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি নির্ভরযোগ্য চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। আমি মূলত ওষুধ খাই যাতে রোগটি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং কোনোভাবেই সীমা অতিক্রম না করে। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ মাস পরপর হাসপাতালে এসে চেকআপ করাতে হয়।’

আরো পড়ুন: ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের রেকর্ড

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা নূর মোহাম্মদ (৪৫) প্রতি তিন-চার মাস পরপর নির্ধারিত তারিখে হাসপাতালে আসেন। তিনি বলেন, ‘এই চিকিৎসা কেন্দ্র ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে উন্নত চিকিৎসার আশায় আসেন।’ তার মতে,‘ ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। আর এ ধরনের বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্র রোগীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।’

জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহসেনা বেগম কাকলী বলেন, বাংলাদেশের বারডেম হাসপাতাল ডায়বেটিস রোগের ক্ষেত্রে একটি বিশ্বমুখী মডেল হিসেবে পরিচিত। এখানে ডায়বেটিস সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিনিয়ত চলে। গবেষণার ফলাফল পরবর্তীতে রোগীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়, যার মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসায় উন্নতি ঘটে।

তিনি আরও বলেন, চোখ, হার্ট, কিডনি, হরমোনসহ সব ধরনের রোগ ডায়বেটিসের সাথে সরাসরি জড়িত। ডায়বেটিসের কারণে এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আমরা এখানে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এসব রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এভাবে রোগীর সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ