সাহরিতে আজানের সময় পানি খেলে রোজা হবে?

পানি পান
পানি পান  © সংগৃহীত

পবিত্র রমজান মাসে কিছু রোজাদারের ক্ষেত্রে দেখা যায় ফজরের আজান শুরু হলেও তারা পানি পান করছেন। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাইকে সাইরেন বাজানো, সেহরি বন্ধ করার ঘোষণা চলা অবস্থায়ও  তারা চা পান করেন, অথবা পান চিবিয়ে থাকেন। এরপর তড়িঘড়ি করে কুলি করে নেন।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, উল্লিখিত কাজ যদি কোনো রোজাদার করে থাকেন, তাহলে তার রোজা কি বৈধ হবে? শরীয়তের দৃষ্টিতে এদের রোজার বিধান কী? নাকি এই রোজার কাজা করতে হবে—এটি নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর। 

সংকেতমূলক আজান: যদি আজান ফজরের সময় শুরু হওয়ার আগেই দেওয়া হয় (যেমন কিছু জায়গায় সাহরি শেষ করার সতর্কতা দিতে আগেই আজান দেওয়া হয়), তাহলে তখন পানি পান করলে রোজায় কোনো সমস্যা নেই।

সুবহে সাদিক হয়ে গেলে: যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে ফজরের সময় (সুবহে সাদিক) শুরু হয়ে গেছে, তাহলে আর কিছু খাওয়া বা পানি পান করা বৈধ নয়। তখন কিছু খেলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

সুবহে সাদিক হওয়া এবং সাহরির সময় বাকি থাকার ব্যাপারে সংশয়যুক্ত সময়ে পানাহার করা মাকরুহ (প্রসঙ্গত, আমাদের দেশের ক্যালেন্ডারগুলোতে আজান ও সাহরির মাঝে কয়েক মিনিট বিরতি দেওয়া হয়। সংশয়যুক্ত সময় বলতে ওই সময়টাকে ধরা যায়)। তবে এ সময়ে খাওয়ার মাধ্যমে রোজা সহিহ হয়ে যাবে। (আহসানুল ফতোয়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা : ৪৩২; আল ফিকহুল হানাফি ফি সাওবিহিল জাদিদ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৪৩৩)

সুবহে সাদিক হয়নি ভেবে সাহরি খেলে করণীয়
কেউ যদি সাহরি খাওয়ার সময় আছে— মনে করে সাহরি খায়। অতঃপর জানা যায় যে, তখন সাহরির সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাহলে পরবর্তী সময়ে সে রোজার কাজা আদায় করতে হবে। কাফ্ফারা আদায় করতে হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৪৩৬)।

সাহরির সময় ও মুস্তাহাব সময়
রোজা রাখার উদ্দেশ্যে শেষ রাতে যে খাবার খাওয়া হয়, শরিয়তে সেটাকে সাহরি বলা হয়। ফকিহদের মতে, সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত সময়কে ছয় ভাগ করে, শেষ ভাগে খাওয়াকে সাহরি বলে। তাই কেউ যদি এশার পর, রোজার নিয়তে খেয়ে নেয়, তাহলে ওই খাবারকে সাহরি বলা যাবে না। এবং এতে সাহরির সওয়াবও সে পাবে না। তবে কেউ যদি সাহরির সময় হওয়ার আগেই খেয়ে নেয়। এরপর শেষ সময় পর্যন্ত অন্য সাধারণ পানাহার করে, তাহলেও সাহরির সওয়াব পেয়ে যাবে। (আল-ফিকহুল হানাফি ফি সাওবিহিল জাদিদ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৪৩৩; বেহেশতি জেওর, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩২১)


সর্বশেষ সংবাদ