আন্দোলনকালে ধর্ষণের শিকার তরুণীর অভিযোগ নিয়ে সমন্বয়ক নুসরাতের ব্যাখ্যা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন দাবি করেছেন বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী অদৃতা মাহি। একই সঙ্গে সমন্বয়ক থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাননি বলে দাবি করেছেন তিনি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি করেন।
তার এই অভিযোগের বিষয়ে খোলাসা করেছেন অন্যতম সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।
দীর্ঘ স্ট্যাটাসে নুসরাত লেখেন, ‘সে (অদৃতা মাহি) আমাকে জানায় সে ৪ আগস্ট ধর্ষণের শিকার হয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগের হাতে। আবার ১০ তারিখেই তার সাথে একই ঘটনা ঘটে! আমি তার কাহিনি শুনে খুবই আতঙ্কিত হয়ে যাই। বিশেষত ১০ তারিখের কথা শুনে। মাহি এটাও জানায় যে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার নাম বলে সে ছাড়া পেয়েছে।’
‘সব মিলিয়ে ঘটনাটা খুবই ভীতিকর ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি সে কাউকে চিনতে পেরেছে কি না? প্রথমে সে বলে কাউকেই চিনতে পারেনি। পরে জিজ্ঞেস করি তারা ছাত্রলীগ এটা বুঝল কি করে? (আমি বুঝতে চেষ্টা করছিলাম কোন বড় নেতা বা কিছু আছে কি না) তখন সে বলে একজনের চেহারা চিনতে পেরেছে।’
‘আমি মাহিকে বলি দ্রুত মামলা করতে, আর জিডির কাগজপত্র দিতে (আমি ভেবেছিলাম মাহি জিডি করেছে কিন্তু কোন রেসপন্স পায় নি)। মাহি জানায় সে জিডি করে নি। আমি তাকে মামলা করতে বলি, এটাও বলি যে মামলার যাবতীয় দায়দায়িত্ব, খরচ, ভবিষ্যতে আদালতের ছোটাছুটি, ওকালতি সাহায্য সবই প্রোভাইড করা হবে। সে জানায় সে মামলা করতে চাচ্ছে না।
আমি ভাবি সে হয়তো ভয়ভীতির কারণে এমন করছে। আমি তাকে বলি পুরো ডিটেইলস দিতে যেন বৈষম্যবিরোধীর পক্ষ থেকে মামলা করা যায়, প্রয়োজনবোধে আমি নিজে বাদী হব। নারায়ণগঞ্জের এসপির সাথে যোগাযোগ করব, দরকার হলে সেটাও বলি। মাহি সেই প্রস্তাবও নাকচ করে।’
‘তারপর সে জানায় সে কনসিভ করেছে! এই ঘটনায় আমি প্রায় আকাশ থেকে পড়েছিলাম কারণ ৪ মাস এটা গোপন করা চরম বোকামি!’
তিনি তার পোস্টে লেখেন, ‘ওই তরুণীকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি এটা সর্বাংশে ভুল!! তাকে বারবার আইনি সহায়তার প্রস্তাব দেওয়ার পরও সে নাকচ করেছে। হয়তো মিডিয়া ট্রায়াল কিংবা অন্য কোনো ভয়ের জন্য। আমি জানি না।’
প্রশ্ন রেখে নুসরাত লেখেন, ‘তাকে আমি জিজ্ঞেস করতে চাই, তোমার জন্য সুবিচার কোনটা হতো ছোট আপু? যে কেন্দ্রীয় কমিটি হয়ইনি, সেটাতে একটা পোস্ট দিলে? নাকি ঢাবির হলে একটা সিট? নাকি তোমার অপরাধীদের শাস্তি?’
সবশেষ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘তুমি আমাকে দ্বিতীয়বার ব্যথিত করলে। প্রথমবার আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে না চেয়ে, দ্বিতীয়বার আল্লাহই জানে, তুমি কি করে ভুলে গেলে কিন্তু ভুল অভিযোগ এনে!’