২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৫৩

শবে মেরাজে বিশেষ ইবাদত কি বিদআত, ইসলাম কী বলে?

পবিত্র মক্কা  © সংগৃহীত

শবে মেরাজ বা মেরাজের রাত ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, নবী করিম (সা.) হিজরতের আগে এই মহিমান্বিত রাতে ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.)-এর সঙ্গে আকাশের ওপারে এক অলৌকিক ভ্রমণে বের হন। তিনি এক রাতে মক্কা থেকে ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাস, সাত আসমান, জান্নাত ও জাহান্নাম ভ্রমণ করেন এবং ফেরার সময় আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন।

এই রাতের গুরুত্ব নিয়ে কোনো দ্বিমত না থাকলেও, এটি ঘিরে বিশেষ কোনো আমল বা ইবাদতের শরিয়তসম্মত বিধান রয়েছে কি না, তা নিয়ে আলেমদের মতামত স্পষ্ট।

বেশিরভাগ ইসলামী বিশেষজ্ঞ ও আলেমদের মতে— শবে মেরাজ উপলক্ষে নির্দিষ্ট কোনো আমল, নামাজ বা রোজার বিধান শরিয়তে সাব্যস্ত হয়নি। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর হাদিস এবং সাহাবিদের আমল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা এই রাতে বিশেষ কোনো ইবাদত পালন করেননি।

শবে মিরাজ উপলক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো নামাজ আল্লাহর রসুলের হাদিসের মাধ্যমে অথবা সাহাবিদের আমলের মাধ্যমে অথবা তাবেয়িদের আমলের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি। এ রাতের কোনো ইবাদত আল্লাহর রসুলের কোনো হাদিসের মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়নি। মেরাজের পরে নবীজি যত বছর বেঁচেছিলেন, তাকেও বিশেষ কোনো আমল করতে দেখা যায়নি।

শবে মেরাজ এর বিশেষ কোনো আমল, রোজা বা ইবাদত নির্ধারিতভাবে শরীয়তে সাব্যস্ত নেই। মুমিনগণ নিজ পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো ইবাদত বন্দেগি ও নেক আমল করতে পারেন।
 
শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে নফল রোজা রাখার কোনো বর্ণনা কোরআন-হাদিসের কোথাও নেই। আল্লাহর রসুল ও তার অনুসারীরা এই দিনে বিশেষভাবে কোনো রোজা রেখেছেন এমন কোনো বর্ণনা ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই এই দিনে শবে মেরাজ উপলক্ষ্যে রোজা রাখা কোনো ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।

রসুল সা. এর তিরোধানের পর প্রায় ১০০ বছর সাহাবায়ে কেরাম জীবিত ছিলেন। তারা ২৭ রজবকে বিশেষভাবে উদ্‌যাপন করেছেন বলে একটি ঘটনাও পাওয়া যায়নি। যে কাজ রসুল সা. করেননি, সে কাজ সাহাবায়ে কেরামও পরিহার করেছেন। সুতরাং ২৭ রজবে কোনো আমলকে দীনের অংশ মনে করা, সুন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হাদিস ও সুন্নতসম্মত নয়। এটাকেই বেদআত বলা হবে।