পুরান ঢাকার নীল আকাশে বাহারি রঙের ঘুড়ি, চলছে কাটাকাটির খেলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫০ PM , আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫০ PM
ঐতিহ্যেবাহী সাকরাইন উৎসব আজ। নীল আকাশে উড়ছে বাহারি রঙের ঘুড়ি, চলছে কাটাকাটির খেলাও। ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবের চিত্র স্বাভাবিকভাবে এমনটাই থাকে। একে ঘুড়ি উৎসব বা পৌষ সংক্রান্তিও বলে। একটা সময় এ উৎসবটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরান ঢাকায় সাড়ম্বরে উদ্যাপিত হয় দিনটি।
জানা যায়, পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, ধূপখোলা, দয়াগঞ্জ, মুরগীটোলা, নারিন্দা, সূত্রাপুর, কাগজিটোলা, বাংলাবাজার, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, ধোলাই খাল, শাঁখারীবাজার, রায়সাহেব বাজার, নবাবপুর, বংশাল, নাজিরাবাজার, তাঁতী বাজার, লালবাগ এবং হাজারীবাগ এলাকার মানুষ এ উৎসবে দিনব্যাপী ঘুড়ি ওড়ান। আয়োজন করেন নানা খাবারের। গত কয়েক বছর ধরে সন্ধ্যায় আতশবাজি ফোটানো, এ উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছিল হালের ডিজে পার্টি। তবে এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। কারণ স্থানীয় পঞ্চায়েত ও মুরুব্বিদের অনুরোধে এবার আর সেইরকম ডিজে পার্টি থাকছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘সাকরাইন উৎসবে বাসার ছাদে সাজানো হয় অস্থায়ী মঞ্চ। যেখানে রাখা হয় সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। এছাড়াও উড়ানো হয় ঘুড়ি। চলে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতাও। এবার আগের মতো সাকরাইন হবে না। কিছুটা পরিবর্তন এসেছে আয়োজনে। সবকিছুর মতো সাকরাইন উৎসবেও ভাটা পড়েছে কিছুটা। তবে ঘুড়ি উৎসবে কোনো কমতি নেই আমাদের।’
শাঁখারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সাকরাইন উপলক্ষে আমাদের প্রতিবার ভালো বেচাকেনা হয়। তবে এবারের শুরুর দিকে একটু কম হলেও আজ বাজার জমে উঠেছে পুরোদমে, বেড়েছে বেচা-বিক্রি। আমাদের কাছে ঘুড়ি, নাটাই সুতাসহ ঘর সাজানোর যাবতীয় সাজসজ্জা রয়েছে। এছাড়াও এবার বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রং ও আকৃতি সম্বলিত বিভিন্ন ঘুড়ি উঠেছে বাজারে।’
শাখাঁরী বাজারে ঘুড়ি কিনতে আসা লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা রিফাত বলেন, ‘ঘুড়ি উড়ানোর জন্য দাম দিয়ে সুতা কিনতে হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সাকরাইনে বন্ধুদের নিয়ে ঘুড়ি উড়াচ্ছি, পাশাপাশি অন্যের ঘুড়ি কাটার চেষ্টা করছি। এগুলো আনন্দ নিয়েই করছি।’
ঢাকাবাসীর সভাপতি শুকুর সালেক বলেন , ‘এটি মূলত পারিবারিক উৎসব। সবাই পরিবারের সাথে পিঠাপুলি আর ঘুড়ি উড়িয়ে পালন করে। কিন্তু ডিজে পার্টি উচ্চ স্বরে গান বাজানো এটা আমাদের কালচার না। মুড়ি, খই,বাতাসা, মিষ্টি খাওয়া। একে উপরের দাওয়াত দেয়া এটাই আমাদের উৎসবের অনুষঙ্গ। সাকরাইনের নামে অপসংস্কৃতি সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।’