২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬

মানুষ ভারতের আধিপত্যবাদ রুখে দেবে : আজহারী

ড. মিজানুর রহমান আজহারী  © সংগৃহীত

জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আমরা ভারতের কাছে বন্ধুত্বে বিশ্বাসী, শত্রুতায় নয়। ভারতের দাদাগিরি ও মিথ্যা গুজব বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করে না। যদি গৌর গোবিন্দে রূপ নেয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ হযরত শাহজালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ভারতের আধিপত্যবাদ রুখে দেবে।

গতকাল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের পেকুয়ার ঐতিহাসিক পুরাতন গুলদি ময়দানে এক মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এ দেশে পূজা-পার্বণে মাদরাসার ছাত্ররা মন্দির পাহারা দেওয়া এবং এ ছাড়া চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার পর গোটা বাংলাদেশ ধৈর্যের পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন।

ঐক্য হচ্ছে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির ভিত্তি উল্লেখ করে ড. আজহারী বলেন, বিগত ৫০ বছর নিজেরা বিরোধে লিপ্ত হয়ে এই দেশটাকে শেষ করে দিয়েছি। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর জাতি হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধ না হলে শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে। আমাদের প্রভু এক, আমরা এক উম্মাহ, আমরা এক উৎস থেকে এসেছি। সুতরাং ভিন্ন ভিন্ন বিভক্তি ও মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও দেশের স্বার্থে আমাদের এক থাকতে হবে। আমাদের আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অব্যাহত ষড়যন্ত্র জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রুখে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অতীতের মতোই দেশে বিভক্তির ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিজমের প্রেতাত্মারা। তাদের জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রুখে দিতে হবে।

মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত মুসলমানরা। সর্বোপরি আলেম সমাজ। মিজানুর রহমান আজহারী এবং আমিও কম নির্যাতনের শিকার হইনি। এক বছর আগেও এ রকম তাফসিরুল কোরআন মাহফিল আয়োজন করা কল্পনা করা যেত না। এ দেশে কথা বলার অধিকার ছিল না, ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল না। দেশ এখন ইসলামবিদ্বেষী, আলেমবিদ্বেষী ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্যাসিবাদ হটাতে জুলাই-আগস্টের শহীদরা অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। তাদের স্বপ্ন ছিল শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।

মাহফিলে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও দেশের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক মুক্তি আসেনি। একমাত্র আল কোরআনই এই জাতিকে মুক্তি দিতে পারে।

তিনি বলেন, ভয় দেখিয়ে আল্লামা আজহারীকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। কোটি জনতার নয়নের মণি আল্লামা সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ কোরআনের কথা বলার জন্য সারাদেশে লাখো সাঈদী তৈরি হয়েছে। আমাদের হত্যা করা যায়, ফাঁসি দেওয়া যায়, কিন্তু কোরআনের আদর্শকে শেষ করা যায় না।

পেকুয়ার সমাজ উন্নয়ন পরিষদ ও মাওলানা শহিদ উল্লাহ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত ৮ম তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে অন্যান্যের মাঝে আলেচনায় অংশ নেন, শায়খ মুফতি কাজী ইব্রাহিম, মাওলানা আবদুল্লাহ আল আমিন, আল্লামা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মাওলানা সাদিকুর রহমান আজহারি, মাওলানা আবদুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আজহারি, জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ আল ফারুক। এর আগে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে দুপুরে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে খুতবা ও ইমামতি করেন শায়খ সালাহউদ্দিন মাক্কী।