পুলিশ আসার খবরে পালালেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক এমপি আনোয়ারুল
ময়মনসিংহ-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ দিনাজপুর শহরে তার দাদা শ্বশুরের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানা যায়। দিনাজপুর শহরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থী খবর জানতে পারেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় স্ত্রীসহ বাসার ড্রয়িং রুমে বসা ছিলেন আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।
শিক্ষার্থীরা এমপির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। এর কিছু সময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সাবেক এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনকে পায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তখনো সেই বাসায় অবস্থান করছিলেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাসার পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দিনাজপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, আমাদের কাছে খবর আসে ময়মনসিংহ-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দিনাজপুরের বালুয়াডাঙ্গা এলাকার আত্মগোপনে আছেন। সেই খবরের ভিত্তিতে সকাল দিকে আমরা তিন শিক্ষার্থী ওই বাড়িতে যাই । সেসময় বাসার ড্রয়িং রুমে ছিলেন এমপি ও তার স্ত্রী । কথা বলে ও ইন্টারনেট ঘেঁটে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপারকে ফোন দেই। এরই মধ্যে স্থানীয় অনেক লোক এসে জড়ো হন। আমরা উল্টো তাদের রোষানলে পড়েছিলাম। পুলিশ ঘটনাস্থলে ১০টা ২০ মিনিটে আসে। পুলিশকে বাড়ির লোকেশন দেখিয়ে দিতে আমরা বাড়ির গেটের বাইরে বের হই। পরে পুলিশসহ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলে তুহিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায় সে সময় স্থানীয়রা সেখানে ছিলেন। তবে সেই বাসায় সাবেক এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান , খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা ময়মনসিংহ-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনকে পাইনি। সেই বাড়িতে তার স্ত্রী ছিল। তিনি আমাদের জানান দুই সন্তানসহ দিনাজপুরে দাদার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। তার স্বামী আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এখানে আসেননি।
উল্লেখ্য, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালে ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে হেরে যান। জুলাই অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়, যার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।