ছাত্রদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় দলীয় কোন্দলের জেরে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানান জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।ঘটনার পর রাত থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি। নিহত পাভেল মিয়া (৩০) কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক এবং কৃষ্ণনগর এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে।
নিহতের বড়ভাই স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহীন মিয়ার অভিযোগ, শুভ নামে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীর পক্ষ নিয়ে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. বায়েজিদ, বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর ও তাদের অনুসারীরা পাভেলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
তিনি আরও জানান, 'রাতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরদিন সকালে সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলি। কিন্তু বায়েজিদ দলবল নিয়ে আমিনুলকে খুঁজতে বেরিয়ে তাকে না পেয়ে পাভেলকে মারধর করে।' এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা করবেন বলেও জানান শাহীন। এ বিষয়ে জানতে বায়েজিদ ও শুভর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তাদের মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী শুভর সঙ্গে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামের তর্ক হয়। এর জেরে শুভর পক্ষ নিয়ে আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তর্কে জড়ান বিএনপি নেতা বায়েজিদ। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরসহ অনুসারীদের নিয়ে আমিনুলকে খুঁজতে পৌরসভার সামনে আসেন বায়েজিদ। এসময় রাস্তায় পাভেলকে পেয়ে বেধড়ক পেটান তারা। স্থানীয় লোকজন পাভেলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, পাভেলের মৃত্যুর খবরে তার অনুসারীরা বায়েজিদ, জাহাঙ্গীর ও শুভর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তিনটি টিনের ঘরে আগুন দেয়। পরে কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, 'দলীয় কোন্দলের জেরে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি অংশের লোকজন পাভেলকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। এই ঘটনার পর প্রতিপক্ষের তিনটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।