লঞ্চ ট্র্যাজেডিতে ৪৭ জনের প্রাণহানির তিন বছর, আজও হয়নি নৌ-ফায়ার স্টেশন
আজ ২৪ ডিসেম্বর, ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের তিন বছর। ২০২১ সালের এই দিনে লঞ্চটিতে আগুনে পুড়ে ৪৭ জনের প্রাণহাণি আর অসংখ্য মানুষ দগ্ধ হন। আর্তনাদের সেই ভয়াল স্মৃতি মনে করে ঝালকাঠিবাসী আজও শিউরে ওঠেনৈ। তবে ঘটনার তিন বছর পার হলেও এখনো স্থাপন হয়নি নৌ-ফায়ার স্টেশন।
২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার সদরঘাট থেকে বরগুনায় যেতে ৬ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ছাড়ে অভিযান-১০ লঞ্চ। গন্তব্যে পৌঁছার আগেই পরদিন ভোরে সুগন্ধার মোহনায় এলে ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। দু’ঘন্টারও বেশি সময় সময় ধরে নদীর মধ্যে জ্বলতে থাকে পুরো লঞ্চ। পরে ভাসতে ভাসতে দিয়াকুল এলাকার চরে আটকে পড়ে।
খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষণে ভষ্মীভূত হয়ে যায় পুরো লঞ্চ। জীবন বাচাঁতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়েন অসংখ্য যাত্রী, বের হতে না পেরে অনেকে লঞ্চের ভেতরেই পুড়ে মারা যায়। এদিন আগুনে পোড়া ৩৭টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নদী থেকে চারজন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ছয় জনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযান লঞ্চে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যদি দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পারতেন, তাহলে এতো প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না। তবে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার এবং তাদের আশ্রয় ও সেবা দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত রাখেন স্থানীয়রা। সেই রাতের কথা স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন তারা।
আরো পড়ুন: বিএসএফের বিরুদ্ধে ১৩ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
দুর্ঘটনার পরপরই ঝালকাঠিতে একটি নৌ-ফায়ার স্টেশনের দাবি উঠলেও তিন বছরেও তা পূরণ হয়নি। এ কারণে অগ্নিসহ যে কোনও নৌ-দুর্ঘটনা থেকে তাৎক্ষণিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে এ নৌ-পথটি।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন থেকে জানা গেছে, জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। নৌ-ফায়ার স্টেশন নির্মাণে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৭ জন মারা যাওয়ার ৪১ দিন আগে একই বছরের ১২ নভেম্বর সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী নামে একটি তেলের জাহাজে স্ফোরণ ঘটে। এতে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় ৭ জনের।