সাবেক এমপি ও তার স্বামীর ব্যাংক হিসাবে লেনদেন পৌনে ৪ হাজার কোটি টাকা
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদারের ৪৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ৮৯৪ কোটি চার লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগে আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বাদী হয়ে এই দুটি মামলা দায়ের করে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আকতার হোসেন এ বিষয়টি জানিয়েছেন। গত ২০ আগস্ট হেনরীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর জান্নাত আরা হেনরী, তার স্বামী ও মেয়ের দেশত্যাগে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। হেনরীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয় গত ২০ আগস্ট। গত ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার থেকে স্বামীসহ গ্রেপ্তার হন তিনি।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলায় সাবেক এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা। হেনরী অবৈধভাবে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭৭ টাকা ও ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার মার্কিন ডলারের (১১৫ টাকা হিসাবে প্রায় ১৫৮৫ কোটি টাকা) সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
সোনালী ব্যাংকের পরিচালক থাকার সময়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে হেনরী অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অপর এজাহারে বলা হয়, আসামি মো. শামীম তালুকদার (লাবু) তার স্ত্রী জান্নাত আরা হেনরীর অপরাধলব্ধ অর্থ দ্বারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২), ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।