বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। পাশাপাশি সীমান্তে দুর্নীতির কারণে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ। গত দুই মাসে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আজ রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, সীমান্তে প্রচুর দুর্নীতি আছে, এ কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের (স্থল, জলসীমা) নানা রুট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আটকানো খুব কঠিন হচ্ছে। দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর রোহিঙ্গা ঢুকে যাচ্ছে। নৌকা নিয়ে ঢুকছে। তবে একটা সীমান্ত দিয়ে যে ঢুকছে বিষয়টা এমন নয়। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে, এটা আটকানো খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে আমি মনে করি না আর একটি ঢল আসবে। যদিও অনেকে আশঙ্কা করছেন। এই আশঙ্কা আমাদেরও আছে। তবে সেই ঢলকে আটকানোর ব্যবস্থা করতে হবে, সেটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়েই।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসার সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংককে ছয় দেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক পরামর্শসভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে।
গত দুই মাসে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে নতুন করে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের নীতিগতভাবে অবস্থান ছিল আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেব না। তবে পরিস্থিতি কখনো কখনো এমন দাঁড়ায় যে আমাদের কিছু আর করার থাকে না। সে রকম পরিস্থিতিতে আমরা ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দিয়েছি। আনুষ্ঠানিকভাবে যে তাদের ঢুকতে দিয়েছি, বিষয়টি এমন নয়, তারা বিভিন্ন পথে ঢুকেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন যেসব বয়স্ক রোহিঙ্গা আছেন, তারা হয়তো পরিস্থিতি মেনে নেবেন। তবে আগামী ৫ বছর পর যেসব তরুণ রোহিঙ্গার বয়স ২০ বছর হবে, তারা বেপরোয়া হয়ে উঠবেন। তখন আমাদের সমস্যা বেশি হবে ঠিকই, তবে সেই সমস্যা প্রত্যেকেরই হবে। এর মধ্যেই নৌকায় রোহিঙ্গারা অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, তাকে (থান সোয়ে) বলেছি মিয়ানমার সীমান্তে তো তোমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সীমান্ত তো রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির (নন–স্টেট অ্যাক্টর) নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র হিসেবে তো আমরা নন–স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি না। কাজেই তাদের দেখতে হবে কোন পদ্ধতিতে সীমান্ত ও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে।