ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া যশোরের মাহফিলের ভিডিওটি অভিনয়ের অংশ
যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার একটি ভিডিও নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পাশে দুই জন কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে আছেন। মঞ্চের আশপাশে বেশ কয়েকজনকে বক্তব্য শুনতে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এটি দ্রুত ভাইরাল হয়। ভিডিওটি ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য ও আলোচনা করছেন।
তবে অনেকে বলছেন, ‘অনুষ্ঠানের ওই ভিডিওতে কোরআনের দুটি আয়াত বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কতল আরেকটি জিহাদ সংক্রান্ত। তবে সশস্ত্র গার্ডের মতো দাঁড়িয়ে এভাবে মাদ্রাসার অনুষ্ঠান করা ঠিক হয়নি। এতে মাদ্রাসা এবং আলেমদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি অভিনয়ের জন্য হলেও এভাবে করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া যশোরের মাহফিলের ভিডিওটি ভুয়া দাবি পুলিশের
ভিডিওটি নজরে আসার পর যশোর সদর থানা পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওটির সত্যতা যাচাই এবং এর পেছনে কারা জড়িত তা উদঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই বিষয়ে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও শিক্ষা সচিব জানিয়েছেন, মাদ্রাসার বার্ষিক আঞ্জুমানের (প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের লড়াই-সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করিয়ে দেখিয়েছেন। এটি অভিনয় ছাড়াই কিছুই নয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর রাজারহাট বিহারি কলোনি এলাকায় ২০১২ সালে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কওমি এই মাদ্রাসায় প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখান থেকে মূলত হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি দেওয়া হয়।
মাদ্রাসাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসার বাৎসরিক আঞ্জুমান অর্থাৎ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রদের একটা বক্তব্যকে কেন্দ্র করে একটা মহল বিভ্রান্ত ছড়ানোর পাঁয়তারা করছে। তার ব্যাখ্যা প্রদান জামেয়ার প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকির পক্ষ থেকে।
লাইভে এসে মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকি বলেন, এটা মাদ্রাসার বাৎসরিক সংস্কৃতির একটি অংশ। কিন্তু ফেসবুকে এটিকে পরিকল্পিত জঙ্গি বলা হচ্ছে। এটার সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনো সর্ম্পক নেই বলেও তিনি এসময় দাবি করেন।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, মাদ্রাসার বার্ষিক আঞ্জুমানের (প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের লড়াই সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করিয়ে দেখিয়েছে।
এই বিষয়ে যশোর কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরা ভিডিওটি আমাদের নজরে আসছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা যাচাই-বাচাই করেছি। এটি একটি ভুয়া ভিডিও।