১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০

কারাগার থেকে ব্যারিস্টার সুমনের চিঠি, কী লিখলেন

কাশিমপুর কারাগার থেকে পরিবারের উদ্দেশ্যে দুটি চিঠি লিখেছেন ব্যারিস্টার সুমন  © সংগৃহীত

ঐতিহাসিক ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিভিন্ন মামলায় কাশিমপুর কারাগারে আছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ ছায়েদুল হক সুমন। সেখান থেকে পরিবারের উদ্দেশ্যে দুটি চিঠি লিখেছেন এই আলোচিত নেতা। জানা গেছে, একটি তার মায়ের উদ্দেশে ও অন্যটি ভাই বোন এবং ভগ্নিপতিদের উদ্দেশে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্যারিস্টার সুমনের ইংল্যান্ড প্রবাসী ভাই চিঠি দুটি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন। ইংল্যান্ড প্রবাসী সোহাগ জানান, তার মা ও বোনেরা দেশে এবং প্রবাসে আছেন। কারাগার থেকে পাওয়া চিঠি সোশ্যাল মিডিয়া ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সবাই পেয়েছেন।

সোহাগ বলেন, ‘ব্যারিস্টার সুমন তার জীবনের সব অর্জন মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছে। কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি করেনি। আশা করি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সে শিগগিরই জনতার মাঝে ফিরে আসবে।’

মায়ের কাছে প্রেরিত চিঠিতে ব্যারিস্টার সুমন লিখেছেন, ‘আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। প্রথমে একটু কষ্ট লাগত, এখন ঠিক হয়ে গেছি। নিয়মিত নামাজ, কোরআন শরিফ পড়ি। বাংলা তরজমা করা কোরআন পড়তে অনেক ভালো লাগে। আপনি নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সারা জীবন আপনাকেই বেশি কষ্ট দিছি। অনেক মোটা বাচ্চা হওয়ার কারণে আমার জন্মের সময়ই আপনাকে কষ্ট দিছি। এই ৪৫ বছরে এসেও আপনার টাকায় আমার পরিবারের বাসা ভাড়া হয়, এর চেয়ে আর বেশি কী এক মায়ের কাছ থেকে নিতে পারি। আপনার জন্য দোয়া রইল। যে বয়সে আপনাকে আমার সেবা করার কথা, সেই বয়সে বরং আপনারাই আমার পরিবারকে দেখতেছেন। আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সুস্থ ও লম্বা হায়াতের জন্য দোয়া চাই। ভালো থাকবেন।  

এছাড়া ভাই-বোন ও ভগ্নিপতিদের উদ্দেশে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন লিখেছেন, ‘আমার জন্য কোনো চিন্তা করো না। রাজবন্দি হিসেবে জেলে আছি, কোনো চোর বা দুর্নীতির হিসেবে নই। আমার কারণে তোমাদের কোনো অসম্মান হউক এটা কখনো চাইনি, আশা করি আল্লাহর রহমতে হবেও না। ’

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘অনেকে বলে আপনার কি সম্পদ আছে? দীর্ঘদিন জেলে কীভাবে খরচ চালাবেন? আমি উত্তর দেই আমার বেশি সম্পদ না থাকলেও পাঁচটি বোন আছে, একটা ভাই আছে। এটাই আমার বড় সম্পদ। শুধু জেলে কেন? আমি পৃথিবীতে না থাকলেও আমার কোনো আফসোস নেই। বোনেরা আমার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তোমাদের চেয়ে ভালো অভিভাবক আর কেউ হতে পারবে না। তোমাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল। ভালো থেকো তোমরা সবাই। আল্লাহ চাইলে দেখা হবে শিগগিরই।’