‘স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যেই দেশের সার্বভৌমত্ব হাইজ্যাক করেছিল ভারত’
স্বাধীনতা অর্জনের এক বছরের মধ্যেই দেশের সার্বভৌমত্বকে ভারত হাইজ্যাক করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিজয় র্যালি পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন সগঠনটির নেতারা।
বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ‘১৯৭১ সালে সামাজিক মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকল আপামর জনতা তাদের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি স্বাধীনতার এক বছর যেতে না যেতেই এ দেশের সার্বভৌমত্বকে হাইজ্যাক করেছিল ভারত। তারপর পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার মাধ্যমে তারা এ দেশে একটি প্রক্সি শাসন কায়েম করেছিল। তবে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বাংলাদেশ শাসন নামক ভারতের সেই আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নকে দুঃস্বপ্ন পরিণত করেছে।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, '২৪-এর জুলাই বিপ্লবের ন্যায় ১৯৭১ সালেও দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেশের আপামর জনতা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ঐতিহাসিক এই সংগ্রামের বিজয় ছিল পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ ত্যাগ ও তিতিক্ষার ফল। কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার আগেই সেই বিজয় ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল।'
এ বিষয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ বলেন, 'সর্বপ্রথম ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খলজির এনে দেওয়া স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনামলের মধ্য দিয়ে। এরপর আমরা দীর্ঘ ১৯০ বছরের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে শত সহস্র জীবনের বিনিময়ে ১৯৪৭ সালে আরেক স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু এরপর দেখেছি আবারো এ দেশের ছাত্র-জনতা জুলুমের শিকার হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, '১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে আমাদেরকে আবারও স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। তখন আমরা ভেবেছিলাম একটি নতুন দেশ পেয়েছি এবার আমরা সামনের দিকে আগাবো। কিন্তু আমরা দেখেছিলাম মুজিববাদের নামে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয় এবং বাংলাদেশ থেকে আমাদের সকল ধরনের মানবিক অধিকার হরণ করা হয়।'
শেখ হাসিনা এ দেশে ভারতের প্রক্সি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন উল্লেখ করে সিবগাতুল্লাহ বলেন, 'হাসিনা রূপী ভারতীয় শাসন বাংলাদেশের ছাত্র জনতা রক্ত দিয়ে প্রতিহত করেছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ নতুন স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই তরুণ সমাজ এখনো ঘরে ফিরে যায়নি। যে কোনো পরাশক্তির হুমকি-ধামকি আমাদের তরুণ প্রজন্ম পরোয়া করে না।
এসময় ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের প্রত্যাশা ছিল এ দেশের মানুষ মুক্তি পাবে। কিন্তু বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে তা সম্ভব হয়নি। যার কারণে বিভিন্ন সময়ে এ দেশকে আবারও স্বাধীন করতে হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশে এখনও বৈষম্যহীন সমাজ কায়েম হয়নি।'