‘নো-বীফ’ খাবার হোটেল বর্জনের দাবিতে সমাবেশ
‘নো বীফ’ তথা গরুর গোস্ত না রাখা খাবার হোটেল বর্জনের দাবিতে সমাবেশ করেছে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠন।
আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার বংশালে আল-রাজ্জাক হোটেলের সামনে “নো-বীফ খাবার হোটেল ভারত ও হিন্দুবাদীদের দালাল, তাই এই ধরনের হোটেল বর্জন করুন”- দাবিতে তারা এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে তারা প্রত্যেকটি খাবার হোটেলে বাধ্যতামূলক গরুর গোশত রাখার দাবি জানান। অন্যথায় এসব হোটেল বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানান তারা।
সমাবেশে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ শতকরা ৯৮ জন মানুষ হচ্ছেন মুসলমান। মুসলমানরা খাবার হোটেলে গরুর গোশত খেতে চায়। কিন্তু গরুর গোশতের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ নিয়ে কতিপয় খাবার হোটেল গরুর গোশত রাখতে চায় না। এতে মুসলিম ভোক্তারা প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ আরিফ আল খাবীর বলেন, ‘গরুর গোশত খাওয়া ফরজ নয় তবে দ্বীন ইসলামের শিয়ার (নিদর্শন)। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আকিদার বিষয়টি যখন আসবে, তখন গরুর গোশত খাওয়া ইমানের অঙ্গ হওয়ার কারণে ফরজ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা বাকারার ২০৮ নম্বর আয়াত শরীফের শানে নুযুল বলা হয়েছে- “বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রা:) পূর্বে ইহুদি ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ইহুদিরা উটের গোশত খায় না। সে কারণে আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রা:) কখনো উটের গোশত খান নাই। যেহেতু তিনি উটের গোশত কখনো খান নাই সেহেতু ইমান এনে মুসলমান হওয়ার পর উটের গোশত খাওয়া উনার জন্য বিব্রতকর ছিল। তিনি একদিন বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমিতো কখনো উটের গোশত খাই নাই, আমাকে উটের গোস্ত না খাওয়ার অনুমতি দিন। এসময় আল্লাহ পাক ওহি নাজিল করলেন- “হে ইমানদারগণ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণ ভাবে প্রবেশ কর। শয়তানকে অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।" (সূরা বাক্বারা শরীফ : ২০৮) অর্থাৎ যদিও উটের গোশত খাওয়া ফরজ নয়, কিন্তু এ আয়াত শরীফ অনুসারে, ইহুদি ধর্মের বিষয়টি যখন সামনে আসছে, তখন উটের গোশত একজন মুসলমানের জন্য ফরজ হয়ে গেছে, ইমানের অঙ্গ হয়ে গেছে। তেমনি গরুর গোশত খাওয়া ফরজ নয়। ঠিক তেমনি হিন্দু ধর্মের আকিদার বিষয়টি যখন আসে, তখন মুসলমানদের জন্য গরুর গোশত খাওয়া ফরজ হয়ে যায়, ইমানের অঙ্গ হয়ে যায়।’
আরিফ আল খাবীর আরও বলেন, ‘ইউরোপ-আমেরিকায় ইহুদি খ্রিস্টানরা মুসলমানদের কথা বিবেচনা করে কখনই হোটেলে হালাল খাবার রাখে না। বাধ্য হয়ে মুসলমানরা নিজেদের জন্য পৃথক হালাল হোটেল খুলে। হিন্দুদের যদি প্রয়োজন হয়, তবে তারা নিজেদের জন্য হিন্দু নাম দিয়ে পৃথক হোটেল খুলুক, কিন্তু মুসলিম হোটেলে হিন্দুদের জন্য মুসলমানদের বঞ্চিত করে তারা গরুর গোশত বন্ধ রাখবে, এমনটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসা করতে হলে খাবার হোটেলগুলোকে বাধ্যতামূলক গরুর গোশত রাখতে হবে। যদি কোন হোটেলে একটিও গরুর গোশতের তরকারি না থাকে, তবে সে হোটেলটি হিন্দুত্ববাদী হোটেল ও ভারতের দালাল বলে প্রমাণিত হবে। সেই হোটেলটিকে সারা দেশব্যাপী বর্জনের ডাক দেয়া হবে।’
সমাবেশে মুসলিম ভোক্তা অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী উসমান আয়ূবী ও মো. সাদমান সহ শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।