কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দেখা মিলল প্লাস্টিক ‘দানবের’
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে বানানো হয়েছে বিশালাকার একটি ‘রোবট দানব’। এ দানব প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির বিরূপতার সাক্ষ্য দিচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে প্রদর্শন করা হয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি এ দানব ভাস্কর্য।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এ রোবট দানরের উদ্বোধন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন।
সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সি-গাল পয়েন্টের বালিয়াড়িতে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে ভয়ংকর এক রোবট দানব। যে দানবটি রক্ত-মাংসহীন প্রতীকী হলেও যার হিংস্র থাবায় প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত সৈকতের প্রাণবৈচিত্র্য। সৈকতে ঘুরতে আসা যে কেউ এটি প্রথম দর্শনে মনে ভয় বিরাজ করলেও কাছে যেতেই সে ভয় কেটে যাবে। আর জানবে দানবটির দেহে বয়ে বেড়ানো প্লাস্টিক দূষণে প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতির মাত্রা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সমাগম ঘটে লাখো পর্যটকের। যারা সৈকতের বালিয়াড়ি ও সাগরের পানিতে ফেলছে প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীর বর্জ্য। এতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দূষণ এবং হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীব ও মানবজীবন। আর প্রাণ-প্রকৃতির দূষণ রোধে এবং সচেতনতা সৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসিন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি দানব ভাস্কর্যের প্রদর্শনীর মত ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের।
প্লাস্টিক বর্জ্যে নির্মিত এ দানবটি দেখতে ভিড় করেছেন সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। তারা বলছেন, এটি দেখতে এসে মানুষ দৈত্য-দানবের ভয়ংকর রূপের মত প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন হবেন। পাশাপাশি নিজেরাও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে সজাগ থাকবেন।
আরও পড়ুন: ৫ মাস পর ছাত্র আন্দোলনে নিহত রাকিবুলের লাশ উত্তোলন
পরিবেশবাদী সচেতন মহল বলছে, বিদ্যানন্দের ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে মানুষ প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত হবে। অন্যান্য সংগঠন ও সংস্থাগুলোকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান তাদের।
গত ৭ নভেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের জন্য ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’ ও স্থানীয়দের জন্য ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ মার্কেট’ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া খালি পাত্র, বোতল ও পলিথিনের প্যাকেটের বিনিময়ে যে কেউ নিতে পারবেন চাল, ডাল, তেল, চিনি ও লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং পর্যটকরা জিতে নেবেন বই, কলম, ক্যাপ, ব্যাগসহ বিভিন্ন উপহার। এ কার্যক্রম থেকেই মূলত ১০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ হয়।