তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে আরও যেসব বাধা
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সংঘটিত গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলায় মামলায় খালাস পেলেও এখনো চারটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তিনি।
গ্রেনেড হামলার মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়ার পর থেকেই তার দেশে ফেরা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, সব মামলা নিষ্পত্তির পরই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ও তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে এখনো ৪টি মামলা বাকি রয়েছে। মামলাগুলো হচ্ছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা, সম্পদ বিবরণীর মামলা, অর্থ পাচার মামলা ও নড়াইলে মানহানির একটি মামলা। এসব মামলাতেও তিনি আইনি মোকাবিলা করতে চান।’
এখনো যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা: ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। একই সঙ্গে তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলা: ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও জুবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিল দুদক। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট এ মামলায় তারেক রহমানকে ৯ বছর ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
অর্থ পাচার মামলা: ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের একটি মামলায় ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেন। ওই মামলায় তারেকের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে দুদক। ২০১৬ সালে বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
মানহানির মামলা: ২০১৪ সালে লন্ডনে এক সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার ও পাক বন্ধু উল্লেখ করে তারেক রহমান নানা অবমাননাকর কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগ এনে সে সময় নড়াইলে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বিশ্বাস। এ মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন নড়াইলের আদালত।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সাল থেকে তার বিরুদ্ধে অন্তত ৮৪টি মামলা হয়েছে। এই ৮৪ মামলার মধ্যে ৫টিতে দণ্ড হয় তারেক রহমানের। আর খারিজ, খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন ৩৯ টি মামলা থেকে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্ত হয়ে সপরিবারে দেশ ছাড়েন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান । সেই থেকে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন।