৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২৩

৫ আগস্টের আগে-পরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন—জানালেন উপদেষ্টা

পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকা‌রের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ৫ আগস্টের আগে ভারতের সঙ্গে এক রকম সম্পর্ক ছিল, এখন আরেক রকম। এই সম্পর্কে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা ব‌লেন উপদেষ্টা।

তৌ‌হিদ হো‌সেন ব‌লেন, আমরা কারো জন্য হুমকি নই। কেউ আমাদের জন্য হুমকি হোক এটা আমরাও চাই না। সব দেশের সঙ্গেই আমরা ভালো সম্পর্ক রক্ষা করতে চাই। 

উপদেষ্টা ব‌লেন, ৫ আগস্টের আগে ভারতের সঙ্গে এক রকম সম্পর্ক ছিল, এখন আরেক রকম। এই সম্পর্কে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। পূর্ববর্তী সরকার তাদের (ভারতের) উদ্বেগ যথাসাধ্য সমাধানের চেষ্টা করেছে। আমাদেরও উদ্বেগ ছিল, তবে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিনি আরও ব‌লেন, আমরা দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তবে আমাদের পানি সমস্যা আছে, সীমান্ত হত্যা আছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, সীমান্ত আছে; এমন সীমান্ত হত্যা হয় না। সীমান্তে অপরাধ হতেই পারে, তাই বলে কোনো সীমান্তে গুলি করে মারার কোনো যুক্তি নেই।

প‌রিবর্তিত প‌রি‌স্থি‌তি‌তে ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূ‌মিকার সমা‌লোচনা ক‌রেন উপদেষ্টা। তি‌নি ব‌লেন, ভারতীয় মিডিয়া যে ভূমিকা নিয়েছে সেটা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের জন্য সহায়ক নয়। আমাদের সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যাচার করছে, সেটা আমাদের মিডিয়াকে তুলে ধরতে হবে। 

তৌহিদ হোসেন বলেন, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জাতীয় ঐক্য। জাতীয় ঐক্য না থাকার কারণেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আমাদের জাতীয় স্বার্থ থাকলেই জাতীয় ঐক্য থাকতে হবে। আমাদের দেখতে হবে আমরা আমাদের ঘর ঠিকমতো গোছাচ্ছি কি না।

তি‌নি ব‌লেন, কী করলে আমাদের স্বার্থ রক্ষা হবে এটা ঠিক করতে হবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হবে সক্ষমতা বাড়ানো। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে আমি বলব, বিদেশে আপনারা স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হন। ভারতীয়রা জড়িত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সে কারণে ভারতীয় প্রভাব বেশি। আমাদেরও এটা করতে হবে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স এবং সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ এ আলোচনা সভার আয়োজন ক‌রে। আলোচনা সভায় প্যানেলিস্ট ছিলেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. এস এম আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব প্রমুখ।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বাংলাদেশ কোনো সাম্প্রদায়িক দেশ নয়, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক দেশ কখনোই ছিল না। বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ভারত কেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকে। কারণ, আওয়ামী লীগ ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে। বিএনপি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে।

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশের লোকদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমি এটা ৫ বছর ধরে বলে আসছি। আমাদের হাজার হাজার লোক আছেন, তারা আমাদের বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেবেন। মিস্টার বিনের সিরিজের মতো হঠাৎ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। স্বাধীনতার জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের ইতিহাস আছে। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী।