আমারও আয়নাঘরে ২৪ ঘণ্টা থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছিল: উপদেষ্টা নাহিদ
আয়নাঘরে থাকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আয়নাঘর, যেখানে মানুষকে গুম করা হতো, সেখানে আমারও অভিজ্ঞতা হয়েছিল ২৪ ঘণ্টা থাকার। আমি থেকেছি সেই রুমটায় এবং দেখেছি দেয়ালে তাদের লেখা, যারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বন্দি ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “বিদ্রূপ ও উপহাসের রাজনীতি: জুলাই বিদ্রোহের সময় কার্টুন ও গ্রাফিতি” শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, আয়নাঘরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতাসহ অসংখ্য নিপীড়নের গল্প আছে। এগুলো এতটাই ভয়াবহ যে ভুক্তভোগীরা এখনও সেগুলো বলতে চায় না। যেখানে সরকার থেকে তাদেরকে বারবার বলতে অনুরোধ করা হচ্ছে, কিন্তু তারপরও তারা বলতে চায় না, এতটাই ভয়াবহ ছিলো তাদের সেই অভিজ্ঞতাগুলো।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের গত পনেরো-ষোল বছরের যে এত এত নিপীড়ন; মানুষের যে এত এত গল্প, এখন এগুলো মানুষ আর্টওয়ারের (গ্রাফিতি-দেয়ালদিখন) মধ্য দিয়ে জানছে। মেইনস্ট্রিম (মূলধারার) পত্রিকাগুলোতেও কিন্তু তখন কার্টুন আঁকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, শিল্পীরা যদি তাদের অভিজ্ঞতা থেকে, মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে এই শিল্পকর্মের মাধ্যমে এগুলো নিয়ে আসে তাহলে বিগত রেজিমটা (আওয়ামী লীগের শাসনামল) আমরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারব। আমাদের আন্দোলনটাও আসলে দেয়াল লিখন এবং আর্টওয়ারের মাধ্যমে এগিয়েছে। আমরা এখন চিন্তা করছি এগুলো সংরক্ষণ করার। মানুষ আসলে কী বলতে চেয়েছিল এবং মানুষ আসলে কী বলতে চায় এগুলোর উপাদান আমরা সেখানে পাবো।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, প্রায় ষোলশর মতো আবেদন করেছে গুম কমিশনে এবং সংখ্যাটা বেড়ে পাঁচ হাজার হতে পারে। মানে পাঁচ হাজার মানুষের গুমের অভিজ্ঞতা হয়েছে গত পনেরো-ষোল বছরে। এই যে তাদের অভিজ্ঞতাগুলো, এগুলো পুরোটাই এড়িয়ে ছিল আমাদের রাষ্ট্রের। আমরা এই কথাগুলো কেউ বলতে পারতাম না।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম আমানুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাভিন মুরশিদসহ আরও অনেকে।