অর্থসংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত, বেতন পাচ্ছেন না ১৯ হাজার কর্মী
স্বাস্থ্য খাতে প্রতি পাঁচ বছরের জন্য তৈরি হয় অপারেশনাল প্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনা। সে অনুযায়ী দেওয়া হয় বরাদ্দ। গত জুলাইয়ে পঞ্চম কর্মপরিকল্পনা পাস হওয়ার কথা, কিন্তু তা এখনো অনুমোদন হয়নি। এতে স্বাস্থ্য খাতে দেখা দিয়েছে টাকার সংকট। ফলে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ও রোগীর জন্য স্যালাইন কেনা যাচ্ছে না।
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের বিনামূল্যের ওষুধ পাচ্ছেন না রোগীরা। শিশুদের কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানো ও টিকা কার্যক্রমও ঝুঁকির মুখে। এ ছাড়া বেতন পাচ্ছেন না প্রায় ১৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী।
সারা দেশে ১৪ হাজার কমিনিটি ক্লিনিক থেকে ২৬ ধরনের ওষুধ পান রোগীরা। এখানেও দেখা দিয়েছে ঘাটতি। ৩৫০-এর মতো এনসিডি কর্নারেও মিলছে না পর্যাপ্ত ওষুধ। এ ছাড়া অন্য সরকারি হাসপাতালেও কমেছে ওষুধের মজুত।
তবে কবে নাগাদ এসব সংকট সমাধান হবে, সে তথ্য নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, নতুন কর্মপরিকল্পনা পাস না হওয়ায় এসব সংকট তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে ডা. ফারুক বলেন, ‘গ্রামীণ পর্যায়ে সাধারণ মানুষ এই সেবাগুলো বিনামূল্যে পেয়ে থাকে। কিন্তু এই সেবাগুলো আর পাবে না। যদি ওপি (অপারেশনাল প্ল্যান) সময়মতো না হয় বা বন্ধ হয়ে যায়।’
এদিকে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীসহ বেতন পাচ্ছেন না প্রায় ১৯ হাজার কর্মী। এরই মধ্যে অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
এসব স্বাস্থ্যকর্মী জানান, প্রতি মাসের বাসা ভাড়া ও পরিবার-পরিজন নিয়ে চলা বেশ কষ্টকর হয়ে গেছে। এখন তারা না পারছেন চাকরি ছাড়তে, না পাচ্ছেন বেতন। এ অবস্থায় তারা ঋণ করেই সংসার চালাচ্ছেন।
১১টি রোগের জন্য বছরে এক হাজার কোটি টাকার টিকা কেনে স্বাস্থ্য বিভাগ। উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় কোনো রকমে চলছে এ কর্মসূচি। র্যাবিসের টিকা, অ্যান্টিস্নেইক ভেনম, এইডস ও যক্ষ্মা এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ কেনাকাটাও বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে সেবা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক শেখ ছাইদুল হক বলেন, ‘আমরা আশা করছি ওপি পাস হবে খুব দ্রুত। একনেকের সভায় বিষয়টি উঠলে এবং কর্তৃপক্ষ যদি এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে জরুরিভিত্তিতে পাস করে দেয়, তখনই আমরা জানতে পারব।’
দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর কোনোটিতে আছে জনবল সমস্যা। আবার কোথাও যন্ত্রপাতির অভাব। এখন যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে দেখা দিয়েছে টাকার সংকট। এ ছাড়া সম্প্রতি দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা, সরকারের পটপরিবর্তনের পর শূন্যতা তৈরি হয়েছে অনেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে। সব মিলিয়ে নানা রকম ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলো।