মুগ্ধর মৃত্যু নিয়ে জাবি অধ্যাপকের পোস্ট, তোপের মুখে ডিলিট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা জুলাই আন্দোলনে নিহত হওয়া মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে এ নিয়ে একটি পোস্ট দেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘কিছুদিন আগে একজন মেসেজ দিয়ে বলল, সবাই আবু সাঈদের কবরে যায়, কিন্তু মুগ্ধর কবরে যায় না কেন? আমি বললাম, কারণ, আবু সাঈদ জামায়াতের লোক ছিল, তাদের লোক ছিল। এরপর সে আমার উত্তরে হা হা রিয়েকশন দিল। হা হা রিয়েকশনের অর্থ তখন বুঝিনি। কাল একজন বলল, মুগ্ধর লাশ, কবরের নাকি হদিস পাওয়া যায়নি। মুগ্ধর পরিবার নাকি কোনো মামলাও করেনি। মুগ্ধর ভাই নাকি বিদেশে ঘুরেফিরে ছবি আপলোড করে বেড়াচ্ছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আজ শুনলাম মুগ্ধ নাকি ফ্রান্সে। নিজের কানকে তো বিশ্বাস করতে পারছি না।’
এই পোস্টের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পোস্টটি ডিলিট করেন অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা। এরপর আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার আগের স্ট্যাটাস অনেকের মনে কনফিউশন তৈরি করেছে বলে ডিলিট করা হলো। আমি শুধু লোকজন আমাকে কী বলেছে, সেটা বলেছি। আমি নিজের কোনো মতামত দিইনি। কারও মনে আঘাত দিয়ে থাকলে আমি দুঃখিত।’
শিক্ষার্থীরা তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলছেন এটা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। এ জন্য তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত বলেন, ‘অবিলম্বে এই আওয়ামী দোসরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে নাসরিন সুলতানার সঙ্গে গণমাধ্যম মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কথা বলেননি।
জানা যায়, সহযোগী অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা ২০১১ সালে দর্শন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। তিনি আন্দোলন চলাকালীন ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি বিতরণ করছিলেন। সেই সময় হঠাৎ সংঘর্ষ বাধে এবং তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার কয়েক দিন পর মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, মুগ্ধ আন্দোলনকারীদের হাতে পানি তুলে দিচ্ছেন। এটি দ্রুত ভাইরাল হলে তখন নানামুখী প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
আন্দোলনে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।