২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৯

সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে নিয়মনীতির বেড়াজালে হতাশ দ্বীপবাসী

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ  © সংগৃহীত

সম্প্রতি পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যেতে নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাস নিতে হবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দ্বীপবাসী। এতে পর্যটক খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে ও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল দ্বীপের মানুষ। এমনটি দাবি স্থানীয় লোকজনের।

সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।

সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, ‘পর্যটন মৌসুমের দুই মাস পার হয়েছে, এখন পর্যন্ত একজন পর্যটকও দ্বীপে ভ্রমণে আসেননি। দ্বীপের পর্যটন ব্যবসায়ীরা ঋণ ও ধারদেনা করে লাখ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ খুলেছেন। এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নানা নাটকীয়তার মাধ্যমে জানানো হয়, সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণে যেতে নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাস লাগবে। এরকম সিদ্ধান্তে দ্বীপবাসী খুবই হতাশ। এতে দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। পর্যটকরা দ্বীপে ভ্রমণে আসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। দ্বীপের পর্যটন নির্ভরশীল ৮০ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ট্রাভেল পাস যেভাবে পাবেন

সেন্ট মার্টিন জেটিঘাটের শ্রমিক রিদুয়ান আহমেদ বলেন, ‘দ্বীপে পর্যটক এলে তাদের ব্যাগ-ট্রলিসহ হোটেলে পৌঁছে দিলে টাকা পেতাম। সে টাকায় পরিবারের খরচ জোগাড় হতো। এখন পর্যটন মৌসুমের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো পর্যটক নেই। দ্বীপে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করলে আমরা দ্বীপবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হব।’

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, পর্যটননির্ভর দ্বীপের মানুষ বর্তমানে অনেক কষ্টে আছেন। সরকারের নানা বিধিনিষেধ দ্বীপের মানুষের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিল।

মুজিবুর রহমান আরও বলেন, অক্টোবর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারাও জরুরি প্রয়োজনে কাঠের ট্রলার বা স্পিডবোটে টেকনাফ আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। তাদেরও টেকনাফে আসা বা যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিনে প্রবেশে লাগছে এনআইডি ও লিখিত অনুমতি

সরকারের এ সিদ্ধান্ত সেন্ট মার্টিনে পর্যটন খাতের ওপর প্রভাব পড়বে বলে জানান কক্সবাজার অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সাবেক প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে কমিটির উপদেষ্টা) মো. আনোয়ার কামাল বলেন, পর্যটকদের নিবন্ধন ও ট্রাভেল পাসে সেন্ট মার্টিনে যাওয়া মানে নিজ দেশে ভিসা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করার মতো সিদ্ধান্ত, যার প্রভাব পড়বে পর্যটন খাতে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেন্ট মার্টিনে কখন পর্যটকবাহী জাহাজ যাবে বা কোন ঘাট দিয়ে যাবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাহাজ কর্তৃপক্ষে এ বিষয়ে ঢাকায় আবেদন করেছে।