১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯

সেই ছাত্রদল নেতার সব পদ কেড়ে নেওয়া হলো

ইয়াসিন মিয়া  © সংগৃহীত

দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদকে হামলা ও মারধরের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়াকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেন। সেই সঙ্গে ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেন।

এর আগে গত রোববার দুপুরে রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ ওঠে। জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া সাংবাদিকের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ইট দিয়ে থেঁতলে দেন। আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জাহাঙ্গীর মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার রূপগঞ্জ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক রাসেল আহমেদ বাদী হয়ে ইয়াসিন মিয়া ওরফে ফেন্সি ইয়াসিন, কাজল, রাব্বিল, ইমন, রকিসহ অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর মাহমুদ বলেন, ইয়াসিন মিয়া ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপরাধ নিয়ে ভুক্তভোগীদের বক্তব্যসহ প্রশাসনের বরাতে কালবেলা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে তার ক্ষতি হয়েছে দাবি করে ক্ষিপ্ত হন। গত ১৫ দিন ধরে ইয়াসিন সেই ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তাকে সংবাদের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ থাকলে যুক্তিসহ জানাতে বলা হয় এবং সঠিক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কোনো চাঁদা দেওয়ার সুযোগ নেই বললে হত্যাসহ মামলা-হামলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এর জেরে রোববার দুপুরের  দিকে ইয়াসিন মিয়ার নেতৃত্বে রাব্বি, ইমনসহ ৪০ থেকে ৫০ জন সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ইট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ ও মাথা থেঁতলে দেয়। চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ইয়াসিন বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা ত্যাগ করেন। পরে স্বজনরা আমাকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, জাহাঙ্গীর মাহমুদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।