এখনই নির্বাচন চান, নাকি সংস্কার চান—প্রশ্ন ড. ইউনূসের
অন্তর্বর্তী সরকার কতদিন ক্ষমতায় থাকবে, নির্বাচন কবে হবে ইত্যাদি বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। এ অবস্থায় সবকিছু জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাজনৈতিক দল ও জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, আপনারা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চান নাকি চলমান সংস্কার শেষ করা হোক তা চান।’
কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন ড. ইউনূস। সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৯) ফাঁকে আল–জাজিরাকে এই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। গতকাল রবিবার এই ভিডিও সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করেছে কাতারের এই গণমাধ্যম।
চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সরকারব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটো প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে—নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি। সারা দেশ নতুন কিছু চেয়েছে জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।’
সবকিছু জনগণ ও রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে হবে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটা করা হবে।’
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে, সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনো ভাবনা আছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘না। আমার মাথায় এমন কিছু নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সীমা কী হতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।’
তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি তা বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।’
সাক্ষাৎকারে ভারতে পলাতক থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কেও মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। এই বিষয়ে ভারতকে বাংলাদেশের উষ্মার কথা জানানো হয়েছে।’