দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন প্রবাসীরা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাজ শুরু করে দিয়েছে।
আজ রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ডে সম্প্রচারিত হয়।
ড. ইউনূস বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নির্বাচনী সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রথম ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ‘নির্বাচন সংস্কার কমিশন’ অন্যতম। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এই কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই কমিশনের প্ল্যাটফর্মে যোগ দিন এবং আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করুন। দেশপ্রেমিক হিসেবে আপনার মতামত দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: গত ১৫ বছরে গুমের সংখ্যা ৩৫০০ ছাড়িয়েছে, ধারণা ড. ইউনূসের
পতিত স্বৈরাচার পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাধ্য হয়ে পুলিশের অনেককেই গণহত্যায় অংশ নিয়েছেন। খুবই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা জনরোষের শিকার হয়েছেন। এতে তাদের মনোবল অনেক কমে যায়। আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে এনে তাদের আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এ ক্ষেত্রে অনেক দৃশ্যমান উন্নতিও হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কিছু নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতিতে সহায়তা করেছে। এজন্য সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। কঠিন এই সময়ে আপনারা সবাই অপরিসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানাই দেশের রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে। তারা তাদের কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি ভয় দেখিয়েছিল তারা ক্ষমতা ছাড়লে দেশে লাখ লাখ লোক মারা পড়বে। টানা সাত দিন পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় থাকার পরও ব্যাপক আকারে সহিংসতা এড়ানো গেছে।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জনগণকে উদ্দেশ্য করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন ‘আপনারা দেশের মালিক। বলে দিন কী চান এবং কীভাবে চান, আপনাদের মতামতই দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়তা করবে।’