ছাত্রশিবির করতে শিক্ষার্থীদের জোরজবরদস্তি করা হয় না: সেক্রেটারি জেনারেল
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির করার জন্য আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে জোরজবরদস্তি করি না। বলি না শিবির করতে হবে। সবাই দলে দলে এসে শিবিরে যোগ দেবে আমরা এমনটাও চাই না। আমরা চাই একজন মানুষ হিসেবে আপনারা নীতিনৈতিকতা, দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধ বজায় রাখেন।’
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় দীর্ঘ এক যুগ পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা কর্তৃক আয়োজিত প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪) শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বিবদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট-সংলগ্ন এজে কনভেনশন হলে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারেনি। দেশব্যাপী একধরনের ভয়ের সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিল। তবে এখন আমরা কথা বলতে পারছি। আমাদের আদর্শ সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানার আগ্রহ প্রকাশ করছে।’
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো কাজ করতে আমরা অন্যান্য সংগঠনের প্রতিও আহ্বান জানাই। আমরা সবাকেই বলব, আপনারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো ভালো ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেন।’
আরও পড়ুন: ঢাবির ক্যান্টিন বয়সহ ভর্তিচ্ছু দুই শিক্ষার্থীর কোচিংয়ে ভর্তির ব্যবস্থা ছাত্রশিবিরের
অনুষ্ঠানে চবি শাখার শিক্ষা ও এইচ আর এম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিমের উদ্বোধনী বক্তব্যে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ ছাড়া উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন, কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রায়হান, চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী, ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, ‘মানুষ হলো একটা সামাজিক জীব, যারা অন্যের অধিকার ক্ষুন্ন করে না, অন্য মানুষকে হত্যা করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এই পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ তায়ালা একটা মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ৫টি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এগুলো হলো, চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস। কিন্তু, আজকে আমরা সমাজ ও দেশে নেতৃত্ব দিতে পারি না। কারণ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক নেই। নেতৃত্ব, জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা কম হয়।’
তিনি আরও বলেন, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করে তুলছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের অন্তর্চক্ষুকে বাড়াতে হবে। কারণ বিপ্লব করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: জাকসু সচলসহ ক্যাম্পাসে সুস্থ ধারার রাজনীতি চায় জাবি ছাত্রশিবির
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা আজ তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখবো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আগেও সচেতন ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব একটা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলব। আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় হবে মাদক ও অস্ত্রমুক্ত।’
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ভর্তি হওয়া প্রায় ১ হাজার নবীন শিক্ষার্থী ও চবি শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।