উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা না রাখায় ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ
রংপুর বিভাগের ছাত্র-জনতা রোববার (১১ নভেম্বর) রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে একটি বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রংপুরের কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করাকে ‘চরম বৈষম্য’ হিসেবে দাবি করেছে। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা দাবি করেছেন, রংপুর থেকে অবিলম্বে একজন উপদেষ্টা নিয়োগ এবং সকল ধরনের বৈষম্য দূর করতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দাবি না মেনে নেওয়া হলে রংপুর বিভাগের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ‘উত্তরবঙ্গ ব্লকেড’ কর্মসূচি এবং বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, শহীদ আবু সাঈদের রক্তে রঞ্জিত উত্তরবঙ্গের প্রতি বৈষম্য বন্ধ না হলে বৃহত্তর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। তারা প্রশ্ন করেন, শুধু দক্ষিণাঞ্চল থেকে কেন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, অথচ রংপুর-রাজশাহী থেকে কেন কাউকে নির্বাচিত করা হচ্ছে না? বক্তারা বলেন, এই অঞ্চলের মানুষেরা আন্দোলন সংগ্রাম করে জীবন দিলেও কেন তাদের অবহেলিত রাখা হচ্ছে?
বিক্ষোভকারীরা আরও বলেন, রংপুর থেকে উপদেষ্টা না রেখে এই অঞ্চলের সঙ্গে বেঈমানি করা হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টা রংপুর সফরে এসে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা পুরোপুরি উপেক্ষিত। রংপুর থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে সরকারের উদাসীনতা কেন? তাদের প্রশ্ন, একদিকে আন্দোলনে অংশ নিয়ে রক্ত দেয়া অঞ্চলকে অবহেলা করা কেন?
বিক্ষোভের শেষে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করেন, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সরকারি অফিস চলাকালীন কোনো ইতিবাচক বার্তা না পেলে তারা সারা দেশের সঙ্গে রংপুর বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করবেন। তারা সরকারের কাছে একটি স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি চান যাতে রংপুরের বৈষম্য দূর করা হয়। অন্যথায়, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য বুধবার বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রংপুর বিভাগের উপদেষ্টা না রাখার বিষয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। সাংবাদিক মাহাবুর আলম সোহাগ ফেসবুকে লেখেন, ‘সবার আগে বুক পেতে জীবন দিলেন রংপুরের আবু সাঈদ। আর চট্টগ্রাম বিভাগের পেয়েছে ১৩ জন উপদেষ্টা!’ জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মোহাম্মদ আরিফ আলী লিখেছেন, ‘কেবল দক্ষিণ অঞ্চলের শাসকরা উপদেষ্টা হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, যেমন- ইমরান আহমেদ, ইমতিয়াজ ইমতি, সাজ্জাদ হোসেন, ডা. জামিল, নাহিদ হাসান খন্দকার, হামীম মুনতাসীর অহন, মুহাম্মদ রাজিমুজ্জামান হৃদয়, ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ। তারা বলেন, রংপুর থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্য অবিলম্বে দূর করতে হবে।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, তারা রংপুরের জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কোনোভাবেই নিরব থাকবেন না। তাদের দাবি, রংপুর থেকে একজন উপদেষ্টা নিয়োগ না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।