০৪ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৫৪

‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ’

হাছান মাহমুদ  © ফাইল ফটো

দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। গতকাল রবিবার লন্ডনভিত্তিক ‘চ্যানেল এস’ টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমি বিএনপির সাথে অনেকক্ষেত্রে একমত এবং বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে। সেটির সাথে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সাথে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করব।

‘আওয়ামী লীগ: তটস্থ, হতাশ, কোণঠাসা?’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল, জুলাই-অগাস্টের ‘হত্যাকাণ্ড’, আওয়ামী লীগের ফিরে আসা, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

এটি ৫ অগাস্ট সরকার পতনের প্রায় তিন মাসের মাথায় আওয়ামী লীগের এমন শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার প্রথম কোনো সাক্ষাৎকার। উপস্থাপক বুলবুল হাসানের সঞ্চালনায় ‘অভিমত’ নামের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ওই অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ তার বর্তমান অবস্থান কোথায় তা জানাননি।

অনুষ্ঠানে ২০০৭ সালে সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে একযোগে আন্দোলন করার উদাহরণ টানেন হাছান মাহমুদও।

বিএনপি এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমালোচনা করে সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নেওয়ার সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী ওই নেতাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যের সঙ্গে ‘একমত’ হওয়ার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধকরণ, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ এবং সংস্কারের বিষয়ে তারেক ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির অনেক বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত। আমরা এক-এগারোর সরকারের সঙ্গে একযোগেই কিন্তু গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনার জন্য, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন করেছিলাম এবং গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান সাহেব, কিংবা বিএনপির মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে বক্তব্যগুলো দিচ্ছেন, সেগুলোর অনেকগুলোর সাথে আমরা একমত।

তিনি বলেন, বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা?’- এই যে প্রশ্ন তুলেছেন, আমি এটির সাথে একমত। এমনকি ছাত্রলীগকে কাগজে নিষিদ্ধ করার পর সেটির বিরুদ্ধেও তারা বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তাদের এই বক্তব্যের সাথে একমত। এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবসহ তাদের শীর্ষ নেতারা যে বক্তব্য দিয়েছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা- এই বক্তব্যের সাথে আমি পুরোপুরি একমত।

রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ প্রশ্ন থেকে শুরু করে দেশে যাতে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না হয়, এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানকেও ‘সাধুবাদ’ জানানোর কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ হওয়ার পর বিএনপি যে বক্তব্য, সেই বক্তব্যের সাথেও আমরা একমত। একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমি হামলা করলাম, সেই রাজনৈতিক দলের অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হল- এ নিয়ে সরকারের কোনো বক্তব্য খুঁজে পাচ্ছি না।