০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৫

নতুন সংবিধানে থাকছে চব্বিশের অভ্যুত্থান, কার্যকর করবে কে?

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্যরা  © সংগৃহীত

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর সর্বত্র রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি ওঠে। এর জেরে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই কমিশন সংবিধানের প্রয়োজনী সংস্কার করবে। তবে বেশ কিছু দিন ধরে প্রশ্ন উঠেছে, পুরনো আঙ্গিকে নাকি নতুন বাংলাদেশের ইতিহাস কিংবা সংস্কারের পর সংবিধান কার্যকর করবে কে?

নতুন প্রণীত হওয়া সংবিধানে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রতিফলন থাকবে। এই সংবিধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারই কার্যকর করবে বলে জানিয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

রোববার (৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবিধান সংস্কার কমিশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্যরা এ মতামত জানান।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান প্রণয়নের সুযোগ নেই’ বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তার ভাষ্য, ‘জন-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটাতে চাইলে নিঃসন্দেহে সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থান না হলে এই কমিশন হতো না।’

অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, সংবিধানে থাকুক বা না থাকুক, নিঃসন্দেহে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন আছে, সেটা তো নিঃসন্দেহে ডকুমেন্টেড হতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারই নতুন সংবিধান কার্যকর করবে বলে জানান কমিশনের সদস্য ও  প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।

তিনি বলেন, ‘কমিশনের প্রস্তাব পাওয়ার পর সেই প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে সুপারিশ কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আর সেটা বর্তমান সরকারই কার্যকর করবে।

সাত উদ্দেশ্য

সাংবিধানিক সংস্কারের সাতটি উদ্দেশ্যের কথা তুলে ধরেন কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ। সেগুলো হলো:

১. দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতিশ্রুত উদ্দেশ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের আলোকে বৈষম্যহীন জনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

২. ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো।

৩. রাজনীতি এবং রাষ্ট্রপরিচালনায় সর্বস্তরে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা।

৪. ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উত্থান রোধ।

৫. রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ - নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনা।

৬. রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন।

৭. রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।