বিএনপি কেন চুপ্পুকে রাখতে চায় যুক্তি খুঁজে পাই না: ফরহাদ মজহার
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বিএনপি কেন চুপ্পুকে ক্ষমতায় রাখতে চায় আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। এটার কোনো সাংবিধানিক যুক্তি এবং রাজনৈতিক যুক্তি নেই। এই তথাকথিত ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে ঢুকানোটাই ভুল ছিল। এই ভুলটা সংশোধন করার উপায় হচ্ছে প্রথমত চুপ্পুকে অপসারণ করা।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত ‘দুর্নীতি ও রাষ্ট্রপতি বা সংস্কার’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, রাষ্ট্রপতি যখন আমাদের বললেন তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র নেই; তিনি (রাষ্ট্রপতি) তখনই আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার ওই পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। এট সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার। সেনাপ্রধানের সাপোর্টের কারণে এই সরকার এখনো টিকে আছে। সেনাপ্রধান যদি এই সরকারকে সমর্থন না করেন তাহলে সরকার মুহূর্তের ভেতরেই পড়ে যাবে। তার শুভবুদ্ধির ওপর ভিত্তি করে এটা দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার চাই না। আমাদের সৈনিকরাও চাই না। সৈনিকরা গুলি করতে অস্বীকার করেছিল বলে এই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। শ্রমিকদের অভিপ্রায়ের সঙ্গে আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি আমাদের অভিপ্রায় মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যে রাষ্ট্র জনগণের অভিপ্রায়কে প্রতিনিধিত্ব করে।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটাই প্রধান দায়িত্ব সেটা হলো এই দেশকে একটি নতুন গঠনতন্ত্র অথবা একটি কনস্টিটিউশন উপহার দেওয়া। নতুন গঠনতন্ত্র কি করে হবে এটা করার জন্য আপনারা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। জনগণের অভিপ্রায় আপনাদের জনগণের কাছে এসেই শুনতে হবে। আমরা পরস্পরে আলাপ-আলোচনা করে একটা জায়গায় আসবো যেটা জনগণের সমষ্টির অভিপ্রায়।
তিনি বলেন, এই পুঁজি তান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইলেকশন করাটা হলো একটি বাজার ব্যবস্থা ব্যবসা। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইলেকশন কখনো গণতন্ত্রকে রিপ্রেজেন্ট করে না। নির্বাচনের সময় ভোট কেনা-বেচা করে এটাতো জনগণের অভিপ্রায় নিশ্চিত হবে না। আমরা চেয়েছি জনগণের অভিপ্রায় নিশ্চিতকরণ। যাদের কাছে টাকা আছে বিশেষ করে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণি তারাই এই ইলেকশনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবে। আমি আপনি কেউ রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে অংশগ্রহণ করতে পারবো না। এখন আমাদেরকে এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে যেখানে সাধারণ মানুষ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে। সেই নীতি আমাদের সংবিধানে এখনো আছে।
ফরহাদ মজহার বলেন, বিএনপিকে এজন্যই বলব নির্বাচন সমাধান নয়। নির্বাচন আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু নির্বাচনের আগে সর্বপ্রথম গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে। একটা নতুন খসড়া তৈরি হবে, সেই খসড়ার আলাপ আলোচনা করার জন্য গণপরিষদের নির্বাচন ব্যবস্থা করতে হবে।