এখনও ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেননি ২০ সাবেক সংসদ সদস্য
রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে অবস্থিত ন্যাম ভবন (এমপি হোস্টেল) জাতীয় সংসদ সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত আবাসস্থল। নির্বাচিত ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যরা পরিবার নিয়ে থাকতেন ন্যাম ভবনে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিলুপ্ত হয়েছে সংসদ। কিন্তু এখনও ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেননি অন্তত ২০ জন সংসদ সদস্য (এমপি)।
এ তালিকায় আছেন শাজাহান খান, মমতাজ বেগম, নাহিম রাজ্জাকের মতো আলোচিত এমপিরা। তাদের ঠিকানায় চিঠি দিয়েও কোনো জবাব পায়নি সংসদ সচিবালয়। এ অবস্থায় ভবনগুলোর নিয়মিত সংস্কারকাজও করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
জুলাই আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর ৬ আগস্ট বিকেলেই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই সংসদ সচিবালয় বাতিল করে সংসদ সদস্যদের ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাটগুলো ।
ন্যাম ভবনের রিসিপশনিস্ট মো. গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, একজন সংসদ সদস্য বরাদ্দ পেয়ে গত ৪ঠা আগস্ট পরিবার নিয়ে ওঠেন ন্যাম ভবনের ১ নম্বর বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটে। কিন্তু একদিন পরই তাদের ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। ৫ই আগস্টের পর দুটি ভবন ছাড়া বাকি সব ভবন খালি পড়ে আছে। ১ ও ৩নং এ দুটি ভবনে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা থাকে। ৫ই আগস্ট দুপুরের মধ্যেই সংসদ সদস্যদের পরিবার ও পরিজন যারা ছিলেন তারা সকলেই ন্যাম ভবন ত্যাগ করে যে যেদিকে পেরেছেন চলে গেছেন। তাদের মালামাল রেখে গিয়েছিলেন।
সাধারণ ও সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে ৩৫০ জন এমপির জন্য রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ২১৬টি ও নাখালপাড়ায় ৯১টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এমপি হোস্টেল হিসেবে পরিচিত নাখালপাড়ার আবাসের ৩ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাট এখনও ছাড়েননি আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, এমপি মমতাজ বেগম ও নাহিম রাজ্জাক। আর ৪ নম্বর ভবনের ফ্ল্যাট দখলে আছে কবিরুল হক মুক্তি ও মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর নামে।
অন্যদিকে, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ৬টি ভবনের মধ্যে দুটি ভবন ৫ আগস্টের পর ব্যবহার করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বাকি ৪টিতে বরাদ্দ করা ফ্ল্যাট এখনও ছাড়েননি অনেক এমপি। তাদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রামের এম এ লতিফ, ময়মনসিংহের ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, কুমিল্লার আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গার আলী আজগর টগর ও রাজবাড়ীর কাজী কেরামত আলী।
এদিকে সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার পর এমপিদের খোঁজ পাচ্ছে না সংসদ সচিবালয়। তাঁদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েও মেলেনি কোনো জবাব।
সংসদ সচিবালয়ের হোস্টেল শাখার কমিটি অফিসার আলম মিয়া বলেন, বরাদ্দ করা ফ্ল্যাট থেকে মালামাল নেওয়ার নিয়ম আছে। এর জন্য আবেদন করা লাগে এবং সাবেক এমপিদের নিকটাত্মীয়রা এই মালামাল নিতে পারেন। এ জন্য তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রও প্রয়োজন হয়। এখনও যারা মালামাল নেননি তাঁদের নোটিশ দেওয়ার পর বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মালামাল নিয়ে যেতে হবে।
শেষ পর্যন্ত এমপিরা ফ্ল্যাটগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে না দিলে তাঁদের জিনিসপত্র বের করে সেসব খালি করার পরিকল্পনা সংসদ সচিবালয়ের।