নানার জালে উঠে আসে ৩ শিশুর মরদেহ
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে আপন দুই বোনসহ তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পাগলপ্রায় তাদের মা। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে উপজেলার সোনারপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ধনু হাওলাদার বাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন তিন জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত তিন শিশুর মধ্যে দুজনের বাড়ি বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিম উদ্দিন বাজার সংলগ্ন হাসাননগর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। তাদের নাম মিম আক্তার (১২) ও মারজিয়া বেগম (৯)। তারা দুজন সম্পর্কে আপন বোন। তাদের বাবা মো. হোসেন প্রবাসে থাকেন।
অপর শিশুর নাম রাফিয়া আক্তার (১০)। রাফিয়া ধনু হাওলাদার বাড়ির প্রবাসী মো. মোর্শেদ মিয়ার মেয়ে। মিম, মারজিয়া এবং রাফিয়া সম্পর্কে খালা-বোনজি। চার দিন আগে মিম ও মারজিয়া বোরহানউদ্দিন থেকে সোনাপুর তাদের নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে।
পরিবার জানান, সোমবার দুপুরের দিকে মিম, মারজিয়া ও রাফিয়া আক্তার বাড়ির পুকুরে গোসল করতে যায়। দীর্ঘক্ষণ পরিবারের লোকজন তাদের দেখতে না পেয়ে খুঁজতে শুরু করেন। কোথাও খুঁজে না পেয়ে পুকুরের ঘাটলায় গিয়ে দেখেন তিনজনের জামাকাপড় ঘাটলায় পড়ে আছে। এরপর সন্দেহ হলে তাদের নানা পুকুরে জাল ফেলেন। জালে একে একে উঠে আসে তিনজনের মরদেহ।
তিন শিশুর নিকটাত্মীয় শাকিব জানান, জালে প্রথমে মিমের মরদেহ উঠে আসে। এর ১০ মিনিট পর মারজিয়ার মরদেহ এবং ৩০ মিনিট পর রাফিয়ার মরদেহ উঠে আসে। তারা আর বেঁচে নেই, এমনটা নিশ্চিত হওয়ার কারণে তাদের কোনো চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় সোনাপুর গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একই বাড়িতে তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ এলাকাবাসী। তাদের হারিয়ে পাগলপ্রায় তাদের মা। প্রবাস থেকে ভিডিও কলে তাদের নিথর দেহ দেখে মূর্ছা যান বাবা। বাকরুদ্ধ তাদের নানা-নানি।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, শিশু তিনটির মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়নি। আপনার (প্রতিবেদকের) কাছ থেকে খবরটি শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে।
ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, পরিবারের অসর্তকতার কারণে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে একই সময় জেলার দৌলতখান উপজেলার মিঝি বাজার এলাকায় অটোরিকশার ধাক্কায় মো. জিহাদ (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জিহাদ তার প্রতিবন্ধী বাবার সঙ্গে বাজারে চুল কাটতে গিয়ে অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।