ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে শহীদদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে: জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের থাবায় যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের সবার ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সবাইকে জানতে দিতে হবে ফ্যাসিবাদীরা এ দেশে কী করেছিল আর কারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। যারা লড়াই করেছেন, তারা কেউ ব্যক্তিস্বার্থের জন্য করেননি, দেশের জন্য করেছেন। জাতির দায়িত্ব তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত রাজধানীর শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, একটা সন্তানকে নিয়ে একটা পরিবার স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্নকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে এই ফ্যাসিবাদ। তাই শহিদ পরিবারের কমপক্ষে একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারা যদি সুযোগ পায়, তারা এ ঘটনা লালন করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর চিকিৎসার অভাবে যারা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন, তাদের পাশে রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে হবে।
এ সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির।
আরও পড়ুন: আন্দোলনে শহীদদের মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা দিতে হবে: জামায়াত নেতা
পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমিরে জামায়াত বলেন, তারা যতগুলা মানুষ খুন করেছে, সব কটির বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মতো যেন অবিচার তাদের সঙ্গে না হয়। তারা যে যা অপরাধ করেছে, তাদের সে অনুযায়ী শাস্তি পেতে হবে। যারা দেশকে ভালোবাসে, তারা দেশ থেকে পালায় না। যারা খুনি, যারা অপরাধ-দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। তাই দেশে থাকার নৈতিক সাহস তারা হারিয়েছে।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী নিহতদের পরিবারের পাশে থেকে তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। আমরা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ন্যায় বিচারে বিশ্বাস করি। ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। তবে জামায়াতের ওপর যে জুলুম করা হয়েছে তা যেন আওয়ামী লীগের ওপর করা না হয়। এই দেশে ন্যায় বিচার কায়েম হলে ভবিষ্যতেও কোনো দল স্বৈরশাসক হওয়ার সাহস করবে না। আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ অব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, ১২ দলীয় জোট প্রধান, সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার,এলডিপির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড.রেদোয়ান আহমদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ফারুক হাসান, জাতীয় গণতান্ত্রিক দল জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের(নুর) সদস্য সচিব রাশেদ খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা,দক্ষিণের নায়েবে আ.সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান,নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন, কামাল হোসেন প্রমূখ।