নিষিদ্ধ হতে পারে আওয়ামী লীগ
৭৫ বছরের পুরনো দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। তবে টানা ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকা দলটির বিরুদ্ধে গুম-খুন ও ভোটাধিকার হরণের অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গণহত্যার অভিযোগও উঠেছে দলটির বিরুদ্ধে।
গত পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদকের কোনও হদিস নেই। এছাড়া, শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই পলাতক রয়েছেন। আবার কেউ কেউ রয়েছেন জেলে।
এর মধ্যেই হত্যা, নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নসহ নানা অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করলো সরকার, প্রজ্ঞাপন জারি
দেশের একটি বেসরকরি টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আওয়াম লীগ গণহত্যা চালিয়েছে। বিশ্বে এমন দলকে নিষিদ্ধ করার উদহরণ রয়েছে। যেমন জার্মানির নাৎসি পার্টি, মুসোলিনির ফ্যাসিস্ট পার্টির রাজনীতি করার অধিকার নেই। এক্ষেত্রে সকল পক্ষের সম্মতি পাওয়া গেলে দলটিকে নিষিদ্ধের কথা ভাবা হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের রায়কে মেনে নিচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের রায় মেনে নিতে না চাইলে ঐতিহাসিকভাবে তাদের ভুগতে হবে। জনগণ ভোটের মাঠে তাদের প্রত্যাক্যান করতে পারে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ইস্যুতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আনু মুহাম্মদ বলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধগুলো জনগণের সামনে ও বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। দল নিষিদ্ধ করলেও রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ হয় না। ফলে দল নিষিদ্ধ করে আসলে কোনও লাভ হয় না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একই ভাষায় রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বললে তা বুমেরাং হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সেই একই পথে হাটলে তাহলে ফলাফল একই রকম হবে। দ্রুত দলটির দোষীদের বিচার নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে? এমন প্রশ্ন উঠলে বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার জন্য উপদেষ্টাদের মধ্যে কোন আলোচনা হয়নি।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রস্তাব এসেছে। সবার ঐকমত্য হওয়ার বিষয় আছে। বৃহত্তর সংলাপের বিষয়, সব দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’