আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’, আঘাত হানতে পারে যে জেলাতে
বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি ২৩ থেকে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডানা’। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বরিশাল এবং খুলনা বিভাগে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার (২১ অক্টোবর) আবহাওয়া অফিসের এক সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘ডানা’। এ নামটি কাতারের দেওয়া।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যেন স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া সংস্থার ঘূর্ণিঝড় অ্যালার্ট অনুসারে, আগামী ২৩ অক্টোবর সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হবে। সেটি ২৩ বা ২৪ অক্টোবর নাগাদ একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
ঘূর্ণিঝড়টি যদি বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের কোনো উপকূলে আঘাত হানে সেক্ষেত্রে এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিমি। ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত করে তবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো।
তবে ঘূর্ণিঝড়টি যদি ভাটার সময় উপকূলে আঘাত করে তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে।
এদিকে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকার উপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করার আশংকা করছি।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ’ডানা’ ২৩ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২ টার পর থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে স্থল ভাগে আঘাত করার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। এটি পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপূর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলে আঘাত করার আশংকা করা যাচ্ছে।
অন্যদিকে যদি ভারতের ওড়িশা অভিমুখে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে তাহলে এর বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০-১৫০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ওড়িশা ও পশ্চিম মেদিনীপুরে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর। বুধবার থেকে তিন দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। ২৩ তারিখ শক্তি বাড়িয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে বলে। এমন হলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।