গ্রেফতারের আগে ব্যারিস্টার সুমন ভিডিওবার্তায় যা বলেছিলেন
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হককে সোমবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর থেকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। তবে তাকে আপাতত পল্লবী থানায় রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রেফতার হওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একটি ভিডিওবার্তা দেন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল মুখ ব্যারিস্টার সুমন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ওই ভিডিও বার্তার ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।
দুই মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ব্যারিস্টার সুমন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশেই আছেন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘অনেকে বিভিন্নভাবে নিউজ করেছে। কেউ বলেছেন আমি লন্ডনে গেছি, কেউ বলেছেন আমি আমেরিকায় গেছি। আসলে কোনোটাই সঠিক নয়। আমি বাংলাদেশেই আছি, ঢাকা শহরেই আছি। ৫ আগস্টের পর আমি কোথাও যাইনি। শুধুমাত্র সিকিউরিটির কারণে আমি একটু গোপনে ছিলাম। এটাই হলো আমার বাস্তবতা।
তিনি বলেন, আমি একটা কথা বলতে চাই। ৫ আগস্টের পর অনেকে আমাকে ভারত বা আমেরিকায় যেতে বলেছে। কিন্তু আমার মনে কখনো সায় দেইনি। ‘আমার মনে হয়েছে আমি জীবনে কোনোদিন দুর্নীতি করিনি। ১০ বছর ব্যারিস্টার থাকার পরও ঢাকায় আমার কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট নেই। একটা গাড়ি ছাড়া আমার নামে সম্পদ নেই। তারপরও আমি অপরাধ করিনি। কেন আমি আমার দেশ ছেড়ে যাব। কারণে এই দেশেই তো আমার লাশ আসবে। এখানেই তো আমার কবর হবে এটা আমার বিশ্বাস।
সুতরাং দেশ ছাড়ার জন্য আমার কখনো ইচ্ছা হয়নি। আমার নামে মামলা থাকলে আমি বিচারের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করব। এই সৎ সাহস আমার আছে। আইনজীবী হিসেবে এই বিশ্বাস আমার আছে।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমি অনেক সম্পদ করতে পারতাম। আমার হালাল ইনকাম দিয়ে আমি অনেক সম্পদ করতে পারতাম। কিন্তু যা ইনকাম করেছি পুরো টাকা চুনারুঘাট-মাধবপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় মানুষের কল্যাণে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। দেশের কল্যাণে এসব কাজ করেছি। এখানে ক্রেডিট নেওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, যেকোনো সংস্থা তদন্ত করে দেখতে পারে একটা গাড়ি ছাড়া আমার নামে কিছু আছে কিনা। আমি কোনো সম্পদ করিনি। এতদিন ব্যারিস্টার থাকার পরও প্রাকটিস করার পরও যা সম্পদ করেছি সব মানুষের কল্যাণে দিয়েছি।
দেশের কল্যাণে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সংস্কারের যে কার্যক্রম সেই কার্যক্রমে আমি এমন সব লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম, যাদের বিরুদ্ধে এখন মামলা চলছে। এগুলো আমিই প্রথমে শুরু করেছিলাম। তারপরও আমি মনে করি দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। এখানে ক্রেডিট নেওয়ার কিছু নেই। যদি দেশকে ভালোবাসেন দেশের সংস্কারে কাজ করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। আমিও মনে করি যদি সংস্কারের জন্য আবারও কাজ করার সুযোগ দেয় তাহলে কাজ করব। সুযোগ না পাইলে আমার কোনো অসুবিধে নেই। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আমি আমার প্রাকটিসটা চালাতে চাই।